Rubel, SwadeshNews24.com: হয়রানির প্রতিবাদ করায় বাকবিতন্ড সৃষ্টি দাবি ছাত্রলীগের যশোর প্রতিনিধি, ১৭ ফেব্রুয়ারী: বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান ও ডেপুটি কমিশনার নিতীশ চন্দ্র বিশ্বাসের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মিরা এ হামলা করেছে বলে দাবি করেছেন কাস্টমসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। প্রভাব খাটিয়ে নিলামের পণ্য কমমূল্যে হাতিয়ে নেয়ার দাবি না মানায় এ হামলা ঘটেছে অভিযোগ কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। অন্যদিকে, ছাত্রলীগের অভিযোগ নিলামকৃত মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের অনুকূলে কাগজপত্র ‘আটকে’ রেখে ঘুষ দাবিতে হয়রানি করার প্রতিবাদে বাকবিতন্ড সৃষ্টি হয়। সে ঘটনাকে অনৈতিক ভাবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ হামলা বলে দাবি করছেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যুগ্ম কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমানের অফিস প্রঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। হামলার প্রতিবাদে কাস্টমসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাৎক্ষণিকভাবে কাস্টমস ও বন্দরের কাজকর্ম বন্ধ করে দিয়ে কালো ব্যাজ ধারণ, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছে। বিক্ষোভ সমাবেশে বেনাপোল কাস্টমস হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। এসময় হামলার জন্য ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের অভিযুক্ত করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। বক্তব্যে তারা সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ বন্ধ করার ঘোষণা দেন। বেনাপোল কাস্টমসের পরিদর্শক রাকিবুল ইসলাম জানান, কাস্টমসে নিলাম আহ্বান করা হলেই স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা প্রভাব খাটিয়ে তা হাতিয়ে নিতে চান। কিন্তু তাতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত ছিলেন ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতা কর্মীরা। দুপুর ১২টার দিকে শার্শা উপজেলা ছাত্রলীগের সম্পাদক আকুল হোসেনের নেতৃত্বে ২৫/৩০ জনের একটি গ্রুপ যুগ্ম কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে যুগ্ম কমিশনার তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তার উপর হামলা করা হয়। ডেপুটি কমিশনার নিতীশ চন্দ্র তাদের বাধা দিতে গেলে তার ওপরও হামলা করে তারা। হামলার প্রতিবাদে কাস্টমস ও বন্দরের সব ধরনের কাজকর্ম বন্ধ করে দেয়া হয়। বন্দর থেকে সব ধরনের মালামাল খালাসও বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ নুরুজ্জামান জানান, নিলামের পণ্য কমমূল্যে হাতিয়ে নেয়ার জের ধরে ছাত্রলীগের নেতারা যুগ্ম কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমানের উপর হামলা করেছে। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের আটক পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান তিনি। এ ব্যাপারে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকুল হোসেন জানিয়েছেন, ২০১৪ সালে তারা বেনাপোল কাস্টমস থেকে নিলামে ৩৯টি মোটরসাইকেল ক্রয় করেন। পরে ওই মোটরসাইকেল তারা বিক্রি করে। ক্রেতারা রেজিস্ট্রেশনের জন্য যশোর বিআরটিএ অফিসে কাগজপত্র জমা দেন। পরে বিআরটিএ অফিস থেকে কাগজপত্র সঠিক আছে কিনা তা যাচাইয়ের জন্য বেনাপোলের কাস্টমস অফিসে পাঠায়। সেই কাগজপত্রের ফাইল আটকে মাসের পর মাস ঘুরাচ্ছেন যুগ্ম কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান। শুধু তাই নয়, পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করা হয়েছে। এ নিয়ে তর্কতর্কি হয়েছে। সেখানে অপ্রীতিকর বা মারপিটের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে, বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার এএফএম আব্দুল্লাহ খান জানান, বহিরাগত একদল সন্ত্রাসী এ ঘটনা ঘটিয়েছে। কিছু সময় কাজ বন্ধ ছিল। ভিডিও ফুটেজে হামলাকারীদের সনাক্ত করে থানায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। সরকারি রাজস্ব আহরণের ব্যাপারে সবাইকে নিয়ে জরুরী সভা করে কাজ করার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান। বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের ওসি অপূর্ব হাসান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। কাস্টমস হাউজে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে বেনাপোল বন্দরে সব ধরনের আমদানি রফতানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করলে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।