জাঠ সম্প্রদায়ের আন্দোলনে হরিয়ানায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। এতে ক্ষতি হয়েছে কমপক্ষে ৩৪ হাজার কোটি রুপি। এ অবস্থায় হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী এমএল খাত্তার ও তার দু’মন্ত্রীকে আজ দিল্লিতে তলব করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে তাদের সাক্ষাত করার কথা। চাকরিতে কোটা দাবি করে আন্দোলনরত জাঠ সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বিষয় যাচাই করছে যে কমিটি তার প্রধান করা হয়েছে ভেঙ্কাইয়া নাইডুকে। আজ এ বিষয়ে তার সামনে হাজির হওয়ার কথা হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী খাত্তার, কৃষিমন্ত্রী ওপি ধাঙ্কার ও অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অভিমন্যুর। এর মধ্যে অভিমন্যুর বাড়িতে গত শুক্রবার আন্দোলনকারীরা আগুন ধরিয়ে দেয়। উল্লেখ্য, গত রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করেন জাঠ সম্প্রদায়ের নেতারা। এর পর থেকে আন্দোলন স্থগিত রাখা হয়েছে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ অব্যাহত রয়েছে। তারা তাদের দাবির পক্ষে সরকারের কাছ থেকে নিশ্চয়তা দাবি করছে। গতকালও আন্দোলনকারীরা দিল্লি ও আম্বালার মধ্যে সংযোগ সড়ক ন্যাশনাল হাইওয়ে ১, ন্যাশনাল হাইওয়ে ১০ অবরোধ করে রাখে। তবে আজ তা যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে। সড়কে যে ক্ষতি হয়েছিল তা গত রাতেই মেরামত করেছে আধা সামরিক বাহিনী। গতকাল সহিংসতায় দু’জন নিহত হয়েছেন রোহতাক ও সোনেপাতে। এ নিয়ে গত ১০ দিনের আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা ১৮ তে দাঁড়াল। এখনও রোহতাক, সোনেপাত, ভিবানি ও রেওয়ারিতে বহাল আছে কারফিউ। এ চারটি জেলার স্কুল বন্ধ রয়েছে তৃতীয় দিনের মতো। এলাকা টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। ওদিকে গত রাতে মুখ্যমন্ত্রী খাত্তারের সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের একটি বৈঠক বসে। সেখানে জাঠ সম্প্রদায়ের জন্য চাকরিতে সংরক্ষিত কোটা সংক্রান্ত বিল বিধানসভায় উত্থাপনের সিদ্ধান্ত হয় আনুষ্ঠানিকভাবে। আন্দোলনকারীরা গত কয়েক দিনে দোকানপাট, যানবাহন ও রেল স্টেশন, শপিং মল, এটিএম, বেশ কিছু খাল ও পানি পরিশোধন কেন্দ্রের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এতে ৮৫০টি ট্রেন চলাচল বাতিল করা হয়। বন্ধ রাখা হয় ৫০০ কারখানা। ব্যবসায় ক্ষতি হয় ৩৪ হাজার কোটি রুপি। যে মুনাক খাল দিয়ে দিল্লিতে পানি সরবরাহ করা হয় তাতে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে আন্দোলনকারীরা। গতকাল এর কিছু অংশ মেরামত করেছে সেনাবাহিনী। ওদিকে দিল্লিতে কমপক্ষে এক কোটি মানুষের কাছে পানি সরবরাহ দেয়া বিঘিœত হচ্ছে। উল্লেখ্য, হরিয়ানার জাঠ সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে তাদের সুবিধা আদায়ের পক্ষে কথা বলছে। কংগ্রেস সরকার ২০১৩ সালে তাদে জন্য ঘোষণা করে ‘স্পেশাল ব্যাকওয়ার্ড কাস্ট’ নামে একটি প্রকল্প। কিন্তু পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট সে উদ্যোগকে গত বছর থামিয়ে দেয়।