বয়স সবে ২০ বছর। খেলার সঙ্গে লেখাপড়ার তাল মেলানো খুব বেশি সম্ভব হচ্ছে না। নিজের মাতৃভাষায়-ই কথা বলেন ছোট্ট ছোট্ট করে। বাংলা উচ্চারণে এখনও সাতক্ষীরার আঞ্চলিকতার টান স্পষ্ট মুস্তাফিজুর রহমানের। ২০১০ সালে প্রথমবার ঢাকা পা দিয়ে এখন ক্রিকেট বিশ্বের সুপার স্টার। ভারতীয় প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল) নবম আসরে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলতে গেছেন তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়ে পড়েছেন ভাষা বিড়ম্বনায়। ইংরেজি কিংবা হিন্দি কোনো ভাষা-ই তিনি ভালো একটা বোঝেন না। আর এ দুই ভাষায় কথা বলাটা তার জন্য আরও দুরূহ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদে কোনো বাঙালি খেলোয়াড় কিংবা কর্মকর্তা নেই। এতে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বেগ পেতে হচ্ছে তাকে। বুধবার সাকিব আল হাসানের সঙ্গে আইপিএলে খেলতে ভারতে যান তিনি। সাকিব কলকাতায় থেকে গেলেও মুস্তাফিজ যান হায়দরাবাদে। কিন্তু সেখানে গিয়ে তার এখনও কারও সঙ্গে ভালোভাবে কথা হয়নি বলে জানিয়েছে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা। হায়দরাবাদের মেন্টর ভিভিএস লক্ষণের সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। কিন্তু খুব একটা কথা হয়নি। এ বিষয়ে মুস্তাফিজ বলেন, ‘খুব কথা না হওয়ার কারণ ওই একটাই- যোগাযোগের সমস্যা’। তবে ভাষা সমস্যা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন মুস্তাফিজ। ওপরে ওপরে নরম হলেও ভেতরে কঠিন। ক্রিকেটে বল হাতে নিয়ে বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের কাবু করার মতো বললেন, ‘আপনারা তো আমাকে চেনেন। আমি এতকিছু ভাবি না। খেলার কথা খেলবো। ভালো করার চেষ্টা করবো। এর জন্য তো আর মুখের ভাষা দরকার নেই।’ তার সঙ্গে একই দলে খেলবেন ভারতের পেসার আশিষ নেহরা ও নিউজিল্যান্ডের ট্রেন্ট বোল্ট। এছাড়া, নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও তার দলে। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেই ফেরার দৃঢ় ইচ্ছার কথা জানালেন মুস্তাফিজ। আশিষ নেহরা নিজেই মুস্তাফিজকে দলে পেয়ে নিজের উচ্ছ্বাসের কথা জানান কয়েকদিন আগে। ক্রিকেটের অন্যতম সেরা বাঁহাতি পেসার ট্রেন্ট বোল্ট। তার সঙ্গে একই দলে আছেন ভারতের উদীয়মান বাঁহাতি পেসার বারিন্দর স্রান। এ ছাড়া ভারতের পেসার ভুবনেশ্বর কুমার ও অভিমন্যু মিঠুনও এই দলে। একই দলে কয়েকজন বাঁহাতি পেসারের সঙ্গে মুস্তাফিজও বাঁহাতি। এতে প্রশ্ন উঠতে পারে- একাদশে জায়গা হবে তো তার? সে জবাবটাও দারুণভাবে দিলেন মুস্তাফিজ। বলেন, ‘শেখার ইচ্ছা তো আছেই। একসঙ্গে এতজন বাঁহাতি পেসার থাকলে অনেক কিছুই শেখা যায়।’