খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, বাজারজাতকারীরা ওই কারণ দেখিয়ে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে। সপ্তাহের ব্যবধানে ২৫ কেজির বস্তায় দাম বেড়েছে ২০০ টাকার কাছাকাছি।
শুক্রবার রাজধানীর বাজারভেদে প্রতি কেজি লবণ গত সপ্তাহের তুলনায় ৬ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এই সঙ্কট আরও ঘনীভূত হবে বলে আশঙ্কা খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের।
এদিকে পহেলা বৈশাখ সামনে রেখে স্বাভাবিকভাবেই ইলিশের দাম চড়া। তবে চাল, ডাল, সবজি, তেল, মসলাসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের বাজার মোটামুটি স্থিতিশীল।
কারওয়ান বাজারে এসিআই সল্টের পাইকারি বিক্রেতা রাকিব বলেন, “এক সপ্তাহের মধ্যে ২৫ কেজি লবণের বস্তার দাম হয়ে গেছে ৮০০ টাকা। এ ধরনের বস্তা আমরা ৫০০-৬২০ টাকাও বিক্রি করেছি।”
খুচরা বাজারে প্রতি কেজি লবণ এখন ৩২ টাকার বেশি বলে জানান তিনি।
লবণের দাম বাড়ার কারণ জানতে কথা হয় বাংলাদেশ সল্ট মিল মালিক সমিতির সভাপতি পরিতোষ কান্তি সাহার সঙ্গে।
লবণ দেশীয় কাঁচামালনির্ভর পণ্য। ডিসেম্বর থেকে মে মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত লবণের কাঁচামাল উৎপাদনের মৌসুম।
“তবে এবার বৃষ্টির কারণে হঠাৎ করে কাঁচামালে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। প্রতি কেজি ২/৩ টাকা দরের কাঁচামাল এখন ১৩ টাকা হয়ে গেছে।”সঙ্কট সমাধানে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে লবণ আমদানির পরামর্শ দিয়েছেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
“এই পরিস্থিতিতে লবণ আমদানি করার বিকল্প নেই। ইন্ডিয়া, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান কিংবা অন্য কোনো দেশ থেকে লবণ আমদানি করতে হবে।”
‘দেড় কেজির ইলিশ ৩৫০০ টাকা’
বাংলা নববর্ষ সামনে রেখে ইলিশের দাম বাড়লেও অন্যান্য মাছ এবং মাংস ও সবজির দাম রয়েছে স্থিতিশীল।
শুক্রবার কারওয়ান বাজারের বিক্রেতারা ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জোড়ায় ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত দাম হেঁকেছেন; যা দুই সপ্তাহ আগেও মিলেছে ১০০০-১২০০ টাকায়।
বাজারের এক দোকানি দেড় কেজির একটি ইলিশের দাম চাইলেন ৩৫০০ টাকা। অবশ্য বেশ কিছুক্ষণ সেখানে থেকেও ওই দামে কাউকে মাছটি কিনতে দেখা যায়নি।
এদিকে বাংলা বর্ষবরণে প্রতিবার ইলিশ দিয়ে আপ্যায়ন করালেও এবার তা নিয়ে দ্বিধায় পড়ার কথা জানালেন সৈকত নামের একজন ক্রেতা। “প্রতি বছরের মতো এবারও ইলিশ কিনব ভাবছি। তবে ইলিশ খাওয়া নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথা শুনতে পাচ্ছি। কী যে করি?”
কারওয়ান বাজারে এদিন প্রতিকেজি বড় তেলাপিয়া মাছ ১৩০ টাকা ও রুই মাছ ২২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
প্রতি কেজি গরুর মাংস ৪০০ টাকা, খাসির মাংস ৫৫০ টাকা ও ফার্মের মুরগি ১৩০ টাকায় পাওয়া গেছে।
আর পেঁয়াজ ৩২ টাকা, দেশি রসুন ৮০ টাকা, আমদানি করা রসুন ১৫০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা, আলু ১৫ টাকা, সিম, ঢেঁড়শ ও চিচিঙ্গা ২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও টমেটো ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।