বৃহস্পতিবারের ভূমিকম্পের আতঙ্ক মন থেকে দূর হতে না হতেই আবার নতুন করে ভূমিকম্পে তছনঠ হয়ে গেছে জাপান। আজ শনিবার সকালে সেখানে আবারো ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৯ জন নিহত হয়েছেন। তবে সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, নিহতের সংখ্যা ৭। এবারও অনেক ভবন ধসে পড়েছে। দেখা দিয়েছে ভূমিধস। একটি মহাসড়কে ফাঁটল সৃষ্টি হয়ে তা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ধসে পড়া ভবনগুলোতে উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে। তার ভিতর অনেক মানুষ আটকে আছে বলে মন্তব্য করেছেন কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, নিহতের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে। অন্যদিকে একটি আগ্নেয়গিরি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তা থেকে অগ্নুৎপাত শুরু হয়েছে। সব কিছু মিলে জাপানের মানুষ তটস্থ। বৃহস্পতিবার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৯ জন নিহত হয়েছেন। ধসে পড়েছে অনেক বাড়ি। সেই ক্ষত এখনও মানুষের মন থেকে সরে যায় নি। তার ওপর আজ শক্তিশালী ভূমিকম্পে তাদেরকে আরও ভীতসন্ত্রস্ত করে তুলেছে। কিউশু দ্বীপে এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। বৃহস্পতিবারের ভূমিকম্পে ধসে পড়েছিল বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পুরনো বাড়িগুলো। কিন্তু আজকের ভূমিকম্পে ধসে পড়েছে নতুন নতুন অনেক বাড়ি। কুমামোতোতে অনেক বাড়ি ধসে পড়েছে। এই কুমামোতো হলো এবারের ভূমিকম্পের উৎসস্থল। কুমামোতোর সরকারি কর্মকর্তা তাকায়ুকি মাতসুশিতা বলেন, কমপক্ষে ৭ জন নিহত হয়েছেন। তবে সরকারি টেলিভিশন এনএইচকে বলছে, নিহতের সংখ্যা ৯। কমপক্ষে ৭৬০ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে। মিনামি-আসো এলাকায় ভূমিধস হয়েছে। সেখানে ধসে পড়া এপার্টমেন্টের নিচে কমপক্ষে ১১ জন আটকা পড়ে আছে। তাদের কি অবস্থা তা জানা যায় নি। ইয়াটতসুশিরো শহরে একটি এপার্টমেন্টে অগ্নিকা-ের সৃষ্টি হয়। সেখানে কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছেন। একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা যাচাই করে দেখছি সেখানে আর কোন ব্যক্তি আটকা পড়ে আছেন কিনা। কুমামোতো শহরের কাছে একটি হাসপাতাল ধসে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় রোগিদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ছবিতে দেখা গেছে ওই হাসপাতাল ভবনটি কাত হয়ে আছে। হিসাকো ওগাতা (৬১) ও তার মেয়েকে উদ্ধার করে রাখা হয়েছে একটি পার্কের ভিতরে। সেখানে নীল প্লাস্টিকের ছাউনিতে আশ্রয় পেয়েছেন আরও প্রায় ৫০ জন। ওগাতা বলেন, থেমে থেমে যে কম্পন অনুভূত হচ্ছে তার কারণে আমরা বাড়িতে থাকতে পারি নি। আমরা ভয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছি। সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা যে আমরা এখনও বেঁচে আছি। শক্তিশালী ভূমিকম্পনে চারদিক দুলছিল। এতে হোটেল কক্ষে রাখা টেলিভিশন সেট মেঝেতে পড়ে ভেঙে গেছে। সেখানকার স্টাফরা অতিথিদের সরে যেতে বলেছে। ভূমিকম্পনের সময় কুমামোতো বিমানবন্দরের একটি সিলিং ভেঙে পড়েছে। এর ফলে ওই বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছে। জাপানের আবহাওয়া বিষয়ক সংস্থার কর্মকর্তা জেনারেল আওকি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে আজ শনিবরের কম্পন ছিল সবচেয়ে তীব্র। যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভের হিসাব মতে, এ কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭। স্থানীয় সময় রাত ১টা ২৫ মিনিটে এ কম্পন আঘাত হানে। জাপানের আবহাওয়া বিষয়ক এজেন্সি এ মাত্রা ৭.৩ মাত্রায় উন্নীত হতে পারে বলে প্রথম দিকে কিয়ুশু উপকূলে সুনামি সতর্কতা জারি করে। পরে তা প্রত্যাহার করা হয়। আজ দিন শেষে ভূমিকম্প আঘাত হানা এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের।