পরিবারের অমতে বিয়ে করায় কন্যাকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন এক মা। এ ঘটনা ঘটেছে পাকিস্তানের লাহোরে। পুলিশ ওই মাকে গ্রেপ্তার করেছে। । এতে বলা হয়, নিহতের নাম জিনাত রফিক। তার শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন পেয়েছে পুলিশ। সারা শরীরে জ্বালানি ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় তার মা। পাকিস্তানে এ মাসে এটা এমন তৃতীয় ঘটনা। গত সপ্তাহে ইসলামাবাদের কাছে মুরি এলাকায় এক যুবতী স্কুল শিক্ষিকাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। তার অপরাধ তিনি একটি বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এর আগে এক বান্ধবীকে পালাতে সহায়তা করেছিল বলে একজন টিনেজ মেয়েকে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়। তাকেও পুড়িয়ে হত্যা করা হয় অ্যাবোটাবাদের কাছে। আর সর্বশেষ শিকার হলেন জিনাত রফিক। বলা হয়েছে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার আগে প্রচ- প্রহার করা হয় তাকে। এরপর আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। যখন আগুন দেয়া হয় তখন তিনি জীবিত ছিলেন কিনা সে জন্য লাশের ময়না তদন্ত করা হতে পারে। পুলিশের সুপারিনটেন্ডেন্ট ইবাদত নিসার বলেছেন, তারা জিনাতের এক ভাইকে খুঁজছেন। সে এখন পলাতক। তবে জিনাতের মাকে পাওয়া গেছে তার মেয়ের লাশের পাশে। তিনি অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। এক্ষেত্রে তাকে কেউ সহায়তা করে নি বলে তার দাবি। জিনাতের আর্তনাদে প্রতিবেশীরা এগিয়ে যান। তারা ঘটনা জানতে পেরে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই মারা যান জিনাত। এক সপ্তাহ আগে তিনি হাসান খান নামে এক যুবককে আদালতের মাধ্যমে বিয়ে করেছিলেন। এ জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে যান তারা। নব দম্পতি হাসান খানের পরিবারের সঙ্গেই অবস্থান করতে থাকেন। হাসান খান বলেন, জিনাত যখন তার পিতামাতাকে আমাদের সম্পর্কের কথা জানায় তখন তারা তাকে প্রচ- প্রহার করেন। এ সময় জিনাতের মুখ ও নাক থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। অবশ্য বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য তার পিতামাতা তাকে প্রলুব্ধ করেন। একত্রিত হওয়ার কথা বলেন। প্রতিশ্রুতি দেন বিয়ের অনুষ্ঠান করবেন। তবে এ নিয়ে শঙ্কিত ছিল জিনাত। সে বলতো তারা আমাকে ছেড়ে দেবে না। তাই সে তার পরিবারে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু আমার পরিবার তাকে বুঝিয়ে রাজি করায়। আমরা কিভাবে জানবো যে, তাকে এভাবে হত্যা করা হবে!
উল্লেখ্য, গত বছর পাকিস্তানে তথাকথিত সম্পান রক্ষার জন্য আত্মীয়রা প্রায় ১১০০ নারীকে হত্যা করেছে। এ তথ্য নিরপেক্ষ সংস্থা হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তান-এর (এইচআরসিপি)। তবে আরও অনেক ঘটনা রয়ে গেছে যেগুলো রিপোর্ট করা হয় না। পাকিস্তানে পরিবারে নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এইচআরসিপির যুগ্ম পরিচালক নিজাম উদ্দিন বলেন, নারীদের শিক্ষা ও স্বাধীনতার দিক দিয়ে সামাজিক অবস্থানে কোন পরিবর্তন আসে নি।