বেলজিয়াম বুঝলো- তারকা খেলোয়াড় সব নয়, প্রয়োজন অভিজ্ঞতারও। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারকা ঝলমলে দল নিয়ে মাঠে নামে বেলজিয়াম। ছিলেন ইডেন হ্যাজার্ড, কেভিন ডি ব্রুইনা, মারুয়ান ফেলাইনি, রোমেলু লুকাকু, ডিভোক অরিগি ও থিবো কুর্তোয়ার মতো নামীদামি ও পরিচিত খেলোয়াড়রা। অন্যদিকে ইতালির দল নির্বাচন নিয়েই কোচ অ্যান্তনিও কন্তের সমালোচনা হচ্ছিল চারদিকে। ‘বুড়ো’ দল নিয়ে কিছুই করতে পারবে না বলে অনেকের মন্তব্য ছিল। কোচ নিজেও আশা দেখতে বারণ করেন। ইতালিকে কাগজে-কলমে ধরা-ই হচ্ছিল না। সমালোচনার জবাবে অধিনায়ক জিয়ানলুইজি বুফন তো আগের দিন বলেই ফেলেন, ‘কাগজে-কলমে আপনারা যা-ই মনে করেন আগামীকাল মাঠেই সব দেখা যাবে।’ সত্যি সত্যিই সোমবার তারা দেখিয়ে দিলো। হিসাবে না রাখা ‘বুড়ো’ ইতালিই চমকে দিলো। ইউরো কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তারা ঝলমলে দল বেলজিয়ামকে উড়িয়ে দিলো ২-০ গোলে। নিখুঁত খেলা উপহার দিয়েই তারা এমন দাপুটে জয় তুলে নেয়। ম্যাচের ৫৭ শতাংশ বল দখলে রাখে বেলজিয়ামের খেলোয়াড়রা। ইতালির গোলমুখে তারা শট নেয় ১৮ বার। কিন্তু এরমধ্যে অনটার্গেটে ছিল ৩টি। অন্যদিকে ৪৩ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখে বেলজিয়ামের গোলমুখে ইতালির খেলোয়াড়রা শট নেয় ১২ বার। এরমধ্যে ৬টিই ছিল অনটার্গেটে। বেলজিয়াম একটি শটও কাজে লাগাতে না পারলেও ইতালি কাজে লাগায় দুইবার। ইতালি ফুটবলে যেন এটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যখনই তাদের বাতিলের খাতায় ফেলা হয়েছে তখনই তারা জ্বলে উঠেছে। ১৯৮২- স্পেন বিশ্বকাপের আগে তাদেরকে কেউ তেমন গণনায় আনেনি। কিন্তু শিরোপা জিতে ফেরে তারা। ২০০৬ বিশ্বকাপেও তেমনই। ইউরো কাপে তাদের একমাত্র শিরোপা আসে ১৯৬৮ সালে। তবে সর্বশেষ ২০১২ আসরে তাদের ফাইনালে ওঠাটা ছিল রীতিমতো অবিশ্বাস্য। কিন্তু ভাঙাচোরা দল নিয়েই তারা সেটা সম্ভব করে। অন্যদিকে ২০০০ সালের পর প্রথম ইউরো খেলতে আসা বেলজিয়াম এদিন প্রথমার্ধে দারুণ খেলে। তারপরও ৩২ মিনিটে গোল হজম করে বসে। ইতালিকে এগিয়ে দেন সান্ডারল্যান্ডের স্ট্রাইকার ইমানুয়েল জাকেরিনি। আর লিঁওতে ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে যোগ করার সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাউদাম্পটনের গ্রাজিয়ানো পেলে। ম্যাচ শেষে বেলজিয়ামের অধিনায়ক ইডেন হ্যাজার্ড বলেন, ‘মানুষ যখন ইতালিকে বাতিলের খাতায় ফেলে দেয়, তখনই তারা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। আর এবার আমরা তাদের সেই শিকার হলাম’।