সাদিয়া আফরোজ,স্বাদেশনিউজ২৪ঃবৈশ্বিক টুর্নামেন্ট কিংবা মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই শুরুর আগে ফেভারিটদের খাতায় আর্জেন্টিনার নাম রাখাটা রোজকার ঘটনা। গত ২৩ বছরে অন্তত হয়ে আসছে এমনটা। এবারও যথারীতি কোপা আমেরিকা সেন্তিনারিয়োতে পরিষ্কার ফেভারিট আলবিসেলেস্তে। ব্রাজিল-উরুগুয়ের মতো চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীরা বিদায় নেওয়ায় শিরোপার পথ আরো পরিষ্কার আর্জেন্টিনার জন্য। যদিও মেপে মেপে পা ফেলতে চান লিওনেল মেসি। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিতের পর ম্যাচ ধরে ধরে এগোনোর কথা জানিয়েছিলেন বার্সেলোনা তারকা। সেই পথের শুরুটা হচ্ছে আগামীকাল ভোর থেকে। যখন সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হবে ভেনিজুয়েলার। পরের কোয়ার্টার ফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চিলি মুখোমুখি হচ্ছে মেক্সিকোর। ইতিহাস-ঐতিহ্যে ভেনিজুয়েলা ধারেকাছেও নেই দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। এবারের কোপার কথাই ধরুন, গ্রুপ পর্ব থেকেই তাদের বিদায়ের প্রবল আশঙ্কা দেখেছিলেন ফুটবল-বিশ্লেষকরা। কারণও আছে যথেষ্ট। ‘সি’ গ্রুপে তাদের সঙ্গে ছিল উরুগুয়ে ও মেক্সিকোর মতো দল। যেহেতু দুটি দল যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে, সেহেতু ভেনিজুয়েলার সুযোগটা ছিল খুব অল্পই। অথচ সেই তারাই উরুগুয়েকে বিদায় করে দিয়ে এখন সেমিফাইনালের পথে। এ জায়গাটাতেই আর্জেন্টিনার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে ‘লা ভিনোতিন্তো’। মেসি নিজেও সমীহ করছেন কোয়ার্টার ফাইনালের প্রতিপক্ষদের। ভেনিজুয়েলার গ্রুপ পর্বের পারফরম্যান্স মনে করিয়ে দিয়ে পাঁচবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী বলেছেন, ‘ভেনিজুয়েলা কঠিন প্রতিপক্ষ। তারা এই জায়গায় এসেছে কারণ ওরা এখানে আসার যোগ্য দল। কঠিন গ্রুপ থেকে ভেনিজুয়েলা এসেছে, তাও আবার প্রায় শীর্ষস্থানের কাছাকাছি জায়গা থেকে।’ সঙ্গে যোগ করলেন, ‘আর সব ম্যাচের মতো এই ম্যাচের জন্যও প্রস্তুত হচ্ছি আমরা। চেষ্টা করব পারফরম্যান্স একই জায়গায় রাখতে, কারণ আমরা কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে যাচ্ছি।’ কোপা মিশন শুরু করেছিলেন মেসি বেঞ্চে থেকে। পরের ম্যাচে বদলি হিসেবে মাঠে নামা বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড বলিভিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে খেলেছেন দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে। এখন সময় এসেছে তাঁর শুরু থেকে মাঠে থাকার। তবে মার্তিনোকে ভাবতে হচ্ছে আনহেল দি মারিয়ার জায়গা নিয়ে। হ্যামস্ট্রিংয়ে টান খেয়ে পানামার বিপক্ষে ম্যাচে মাঠের বাইরে চলে যাওয়া এই উইঙ্গারের জায়গায় সম্ভবত মার্তিনো খেলাবেন নিকোলাস গাইতানকে। সমস্যা আছে আরো। গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচে একাদশে থাকা গনসালো হিগুয়েইন আলো ছড়াতে পারেননি, তাঁর জায়গায় তাই ফিরতে পারেন সের্হিয়ো আগুয়েরো। অবশ্য ম্যানচেস্টার সিটি ফরোয়ার্ড নিজেই তেমন কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না, ‘আমার মনে হয় না আমি থাকব (শুরু থেকে)। যদিও জানি না লাইনআপ কেমন হতে পারে। কোপার শুরু থেকে আমি বেঞ্চে থেকে মাঠে নেমেছি, আর আমার বিশ্বাস সামনের ম্যাচেও এমনটাই হবে।’ আগের ম্যাচে বিশ্রাম পাওয়া হাভিয়ের মাসচেরানো ও মার্কোস রোহো অবশ্য ফিরছেন একাদশে। এদিকে টুর্নামেন্টের শুরু থেকে আলো ছড়াচ্ছে মেক্সিকো। ‘সি’ গ্রুপ থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। লিভাইস স্টেডিয়ামের এই ম্যাচে অবশ্য কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে চিলির সামনে। হোর্হে সাম্পাওলির বিদায়ের পর এলোমেলো হয়ে যাওয়া চিলি গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দিয়েছে ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত। তা ছাড়া গত কোপার ইতিহাস তো সঙ্গে আছেই। দু-দুবার এগিয়ে গিয়েও ‘লা রোজা’দের সঙ্গে ড্র করতে হয়েছিল মেক্সিকোকে ৩-৩ গোলে। সান্তিয়াগোর যে ম্যাচটিকে ২০১৫ সালের কোপার অন্যতম সেরা ম্যাচ হিসেবে ধরা হয়। আগামীকাল সকালেও কিন্তু অপেক্ষা করছে আরো একটি উত্তেজনাকর দ্বৈরথ। নকআউট পর্বের লড়াই বলে কথা!