সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান, স্বদেশ নিউজ২৪.কম: বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৮টি দেশ একযোগে নিউওয়ার্কভিত্তিক ব্লুমবার্গ ফিল্যানথ্রপিস-এর ‘স্বাস্থ্যের জন্য উপাত্ত’ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বাংলাদশের এই উদ্যোগে যুক্ত হওয়া উপলক্ষে সিআরভিএস সেক্রেটারিয়েট, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন প্রোগ্রাম যৌথভাবে ২২ জুন বুধবার, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসএসএফ ব্রিফিং রুমে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
‘স্বাস্থ্যের জন্য উপাত্ত’ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ফলে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং জনগণের জন্য উন্নততর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা আরো সহজ হবে। ব্লুমবার্গ ফিল্যানথ্রপিস এবং অস্ট্রেলীয় সরকারের যৌথ ব্যবস্থাপনায় গত বছর এ উদ্যোগটি চালু করা হয়। এ উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশের সরকার ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতি নির্ধারকগণ এখন আগের যেকোনো সময়ের চাইতে স্বাস্থ্যখাতের অগ্রাধিকার নির্ধারণ, চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, তথ্য সংগ্রহ, জনস্বাস্থ্যে বরাদ্দ এবং এ খাতের সাফল্য পরিমাপ করতে পারবে।
সংবাদ সম্মেলনেউপস্থিত ছিলেন সিআরভিএস কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর মো. নজরুল ইসলাম, এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার, প্রফেসর এ কে আজাদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, শাহ আলী আকবর আশরাফী, সিআরভিএস কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর এবং অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।
জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত সঠিক এবং প্রয়োজনী তথ্য থাকলে রোগ প্রতিরোধ করা যেমন সম্ভব তেমনি মৃত্যুর হার কমিয়ে আনা সম্ভব। অন্যদিকে, তথ্যের অভাবে বিপরীত ঘটনাও ঘটে। জন্ম-মৃত্যু এবং মৃত্যুর কারণ সম্পর্কিত বিশদ তথ্য না থাকার কারণে সরকার, দাতাগোষ্ঠী, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা তাদের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ সঠিকভাবে ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়। ফলে জনস্বাস্থ্যে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল সম্ভব হয়না।
ব্লুমবার্গ ফিল্যানথ্রপিস সারা বিশ্বের ১৮টি দেশকে চিহ্নিত করেছে যারা স্বাস্থ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনায় এখনও পিছিয়ে আছে, তবে এ ক্ষেত্রে তাদের যথেষ্ট সম্ভাবনাও রয়েছে। এসব দেশের আগ্রহেই মূলত এই যৌথ উদ্যোগ।
‘স্বাস্থ্যের জন্য উপাত্ত’ উদ্যোগে সদস্য দেশগুলোর স্বাস্থ্যখাতের অগ্রাধিকার, সমস্যা, সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা হয়েছে যাতে সহজে প্রত্যাশিত ফলাফল লাভ সম্ভব হয়।
অস্ট্রেলীয় সরকার ও ব্লুমবার্গ ফিল্যানথ্রপিস ছাড়াও এ বিশাল উদ্যোগে যৌথভাবে কাজ করছে সিডিসি ফাউন্ডেশন, জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়, ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস, মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড নেশন্স ইকোনোমিক কমিশন ফর আফ্রিকা, ইউনাইটেড নেশন্স ইকোনোমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বাংলাদেশে এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করবে Civil Registration and Vital Statistics (CRVS) সচিবালয়। একটি অভিন্ন আইডি-ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নাগরিকের জীবন-প্রবাহের উল্লেখযোগ্য ঘটনাসমূহ তথ্য-উপাত্ত আকারে সংরক্ষণ এবং এর ভিত্তিতে সরকারের সকল সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে Civil Registration and Vital Statistics (CRVS) উদ্যোগের সূত্রপাত।
ব্যক্তি বিশেষের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা এবং নির্ভূলভাবে জনসেবা নিশ্চিত করার জন্য সিআরভিএস আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি পদ্ধতি, যা সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে সেবা প্রদানের প্রচলিত পদ্ধতির সীমাবদ্ধতাকে সর্বক্ষেত্রে অতিক্রম করে জনসেবায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করা সম্ভব হবে। সিভিল রেজিস্ট্রেশন একটি নিয়মিত প্রশাসনিক ব্যবস্থা যার মাধ্যমে একজন নাগরিকের জীবনে সংঘটিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা যেমন জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ ইত্যাদি রেকর্ড করা হয়।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সিআরভিএস বাস্তবায়ন করার জন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে একটি CRVS Steering Committee গঠিত হয়। ২০১৫ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে CRVS সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম CRVS উদ্যোগ বাস্তবায়নকারী অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে।
ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রফিস বিশ্বের ১২০টি দেশে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর উন্নত ও দীর্ঘ জীবন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এই প্রতিষ্ঠান ৫টি ক্ষেত্রে যথা- কলা (Art), শিক্ষা, পরিবেশ, সরকারি উদ্ভাবন এবং জনস্বাস্থ্য বিষয়ে বিশেষভাবে আলোকপাত করে থাকে। এ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যের জন্য ভিজিট: bloomberg.org।