অজয় কুন্ডু, মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের উত্তর খাকছাড়া গ্রামের ৮নং ওয়ার্ডের এক নিরহ গরীব কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যার্থ হয়ে এলাকায় কুৎসা রোটাছে একই এলাকার মহিবুল নামে এক বখাটে।
বৃহস্পতিবার(১৪-০৭-১৬)ইং উত্তর খাকছাড়া গ্রামের মোসলেম চৌকিদারের মেয়ে পলিকে রাস্তার পাশে একটি ঝোপে নিয়ে ধর্ষণ এর চেষ্টা চালাতে চায় একই গ্রামের সিদ্দিক মাতুব্বর ও খামারবাড়ীর আলীয়া মাদ্রাসা দশম শ্রেণির ছাত্র মহিবুল মাতুব্বর। মেয়েটির চিৎকার এলাকাবাসী ছুটে এলে মেয়েটি রক্ষা পায়। কিন্তু সমস্যা থেকেই যায়, গ্রামের সবার অভিযোগ মেয়েটিকে ওই ছেলেটি ধর্ষণই করেছে। তাই ওই ছেলের সাথেই এ মেয়ের বিয়ে কথা চলতে থাকে। এ সময় গ্রামের গণ্যমান্যদের নিয়ে সালিশ হলে সঠিক বিচার থেকে বঞ্চিত হয় এ নিরহ গরীব কিশোরীর পরিবারটি। বখাটের পরিবার মিমাংশা হবে তবে ১ লাখ টাকা যৌতুক দিতে হবে। তাহলে ওই মেয়েকে ছেলেটি বিয়ে করবে। কিন্তু গ্রামের গণ্যমান্যদের বিচারে তারা নিরুপায়। দিন মজুরে দিন আনা পরিবারটি কি করবে কি করে এতো টাকা জোগার করবে। কিন্তু এ অপরাধটি যেন গরীব অসহায় পরিবারটিকে আর অসহায় করে দিয়েছে, এলাকায় বেশীর ভাগ জনগন মেয়ের পরিবারের পক্ষে কথা বলেছে এবং এলাকার সাধারণ জনগন জানান এই বখাটের চরম বিচার হওয়া উচিৎ।
এমন অভিযোগের প্রমাণ নিতে রবিবার সরেজমিনে ওই গ্রাম ঘুরে জানা যায়, নিরহ পরিবারটি প্রায় ২ মাস আগে পাশের গ্রামের এক ছেলের সাথে তার মেয়ের বিয়ে ঠিক করে। কিন্তু বিয়ের আগে এসব কথা যানাযানি হলে তারা মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজি হয় না। এ পর্যায়ে জানা গেলো যৌতুকের পরিমান বেশি হলে তারা মেয়েকে স-সম্মাণে বিয়ে করতে রাজি হবে।
ধর্ষণের চেষ্টায় শিকার হওয়া কিশোরীর কাছে জানতে চাইলে এবং ধ্বর্ষণের চেষ্টা কারীর সাথে বিয়ে হলে তার সুখ বা ইচ্ছা বিষয়ে জানতে চাইলে কিশোরী মেয়েটি বলে, আমাকে ওই ছেলেটি অনেক আগে থেকেই বিরক্ত করতো। অনেক সময় টাকা দিয়ে বিভিন্ন কু-প্রস্তাবে রাজি হতে বলতো। কিন্তু আমি ওই দিন কোন কিছুতেই রাজি না হওয়াতে আমাকে হাত ধরে মুখ চেপে ধরে নিয়ে যায় পাশের একটি নির্জন ঝোপে। এরপর আমি চিৎকার দিলে ছেলেটি পালিয়ে যায়। তবে আমার শারিরিক ক্ষতি না করতে পারলেও বর্তমানে তার চেয়ে আমার আরও বেশী ক্ষতি হচ্ছে। এলাকাবাসী কাছে ওই ছেলে কুৎসা রোটাচ্ছে। এরপর আমাকে কেউ বিয়ে করবে কি বলেন। আমি ভয়ে লজ্জায় ঘর থেকে বের হতে পারছিনা।
এদিকে ধর্ষণকারীর বিষয়ে এলাকার লোকজন দাবী করে বলেন, মাদ্রাসা পড়–য়া ছাত্রটির স্বভার চরিত্র কখনোই ভালো ছিল না। গ্রামের অন্য মেয়েদেরও বিভিন্ন ভাবে বিরক্ত করে আসছিল এ ছেলেটি।
লাঞ্ছিত হওয়া মেয়ের মা জানান, আমরা অসহায় গরিব আমাদের দিন আন্তে পান্তা ফুরায়। আমার মেয়ের ক্ষতি করতে ব্যার্থ হয়ে, এলাকায় কুৎসা রোটচ্ছে। আমার আরও বড় ক্ষতি করছে।
একই গ্রামের ছেলের বাড়িতে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বাড়িতে ছেলে পরিবারের সবাই পালিয়েছে সাংবাদিকদের আসার খবর পেয়ে। তবে সাংবাদিকরাও নাছর বান্দা পরিবারের সাৎক্ষাতকার না নিয়ে ফিরবে না, প্রায় দুই ঘন্টা বসে থেকেও না পেয়ে নতুন কৌশল অবলম্বন করল। চলে আসার কথা বলে ঠিক আধাঘন্টা লুকিয়ে থেকে কিছুক্ষন পর আবার সাংবাদিকরা বাড়ীতে গিয়ে বখাটের মা ও তার ছোট ভাইকে বাড়িতে পাওয়া যায়।
বখাটের মায়ের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তার ছেলের অপরাধ অস্বীকার করে বলেন, ছোট ছেলে-মেয়েরা দিনের বেলা হাত ধরাধরি ছাড়া আর কিছুই করেনি। আর আমার ছেলে সহজ-সরল এবং ওই মেয়ে আমার ছেলের সম্পর্কে ফুফু হয়। গ্রামের লোকেরা এ বিষটি অনেক বড় করে দেখছে বলে তার অভিযোগ। অবশেষে বিয়ে বা জরিমান কথা অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে মস্তফাপুর ইউনিয়নের উত্তর খাকছাড়া গ্রামের ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জালাল মাতুব্বরকে কোথায়ও খুজে না পেয়ে ফোনে আলাপে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন এই দুই জনের মধ্যে তেমন কিছু হয় নাই সামান্য ঘটনা হয়েছে সেটা আমরা মিটমাট করে দিয়েছি।
মস্তফাপুর ইউনিয়ন পরিষোদে গিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস মল্লিকে পাওয়া যায়নী তবে তার অফিস খোলা ছিল। এবং কিছুক্ষন অপেক্ষা করে তার কাছে এই বিষয়ে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাকেতো আপনারা যা জানালেন তা ওই গ্রামের লোকেরা জানায়নী। আমাকে জানিয়েছে সামান্য কিছু এবং সেটা এলাকার কিছু লোক মিটমাট করে দিয়েছে।