ছাতক প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী দু’টি উপজেলা হচ্ছে ছাতক ও দোয়ারাবাজার। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে দু’টি উপজেলার উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সদ্য রোপা আমন ও বীজতলা। বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা, লক্ষীপুর, বাংলাবাজার, মান্নারগাঁও, বগুলাবাজার, নরসিংপুর, দোয়ারাবাজার সদরসহ ৯টি ইউনিয়ন ও ছাতক পৌরসভাসহ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর, নোয়ারাই, কালারুকা, ছাতক সদর, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও, উত্তর খুরমা, দক্ষিণ খুরমা, দোলারবাজার, ছৈলা-আফজালাবাদ, চরমহল্লা, জাউয়াবাজার, ভাতগাঁও, সিংচাপইড়সহ ১৩টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের মানুষ। পাহাড়ি ঢলে দু’উপজেলার সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে ভারতীয় সীমান্ত সংলগ্ন সুরমা, লক্ষীপুর, বাংলাবাজার, বগুলাবাজার, নরসিংপুর, ইসলামপুর ও নোয়ারাই ইউনিয়ন। রেকর্ড পরিমান বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। উপজেলা সদরের সাথে দোয়ারাবাজর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের যোগাযোগের প্রধান সড়কগুলোর বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে যাওয়ায় এবং বন্যার পানিতে নিম্ন এলাকার সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কয়েকদিনের টানা বর্ষনে দোয়ারাবাজারের খাসিয়ামারা, চিলাই, চেলা, মরাচেলা ও চলতি নদী, ছাতক উপজেলার সুরমা, পিয়াইন, ধলাই, চেলা, মরাচেলাসহ সব ক’টি পাহাড়ি নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ব্যবসা-বানিজ্যে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। পাথর আমদানি বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন প্রায় ১০সহ¯্রাধিক শ্রমিক।
জানা গেছে, পাহাড়ি ঢলে সুরমা ইউনিয়নের খাসিয়ামারা নদীর টিলাগাঁও রাবারড্যামের বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করে। এতে মহব্বতপুর, বক্তারপুর, গোজাউড়া, খাগুড়া, জিয়াপুর, আলীপুর, বৈঠাখাই, গিরিশনগর, মিরপুর, মারপশী, বরকত নগর, কাওয়ারগড়, শিমুলতলা, রাজনগর, টেংরাটিলাসহ অন্তত ১৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। এছাড়া বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ছাতক ও দোয়ারাবাজারের কৃষকের রোপা আমন ফসল ও বীজতলা, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বেরিবাঁধ, মৎস্য খামার, কাঁচা ও পাকা সড়কসহ গ্রামীন রাস্তা-ঘাট। দোয়ারাবাজার-নৈনগাঁও-ছাতক সড়কের নৈনগাঁওয়ে অবস্থিত দু’টি ব্রীজের এপ্রোচ ভেঙ্গে যাওয়ায় দোয়ারাবাজারের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। নব নির্মিত ব্রিজগুলোর এপ্রোচে মাঠি না দেয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। ছাতক উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুজ্জামান জানান, বন্যায় উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা করছেন। পূর্নাঙ্গ তালিকা সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরন করা হবে। দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্থ রাবারড্যাম সড়কসহ সুরমা ইউনিয়নের পানিবন্দী এলাকা এলজিইডির কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে পরিদর্শন করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। ##