ফিলিপাইন পুলিশের প্রধান জানিয়েছেন, গত ৭ সপ্তাহে দেশটিতে মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছেন ১ হাজার নয়শরও বেশি মানুষ। এর মধ্যে পুলিশি অভিযানে নিহত হয়েছেন সাড়ে সাতশ। বাকি ঘটনাগুলোর তদন্ত চলছে। দেশটির নতুন প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তে ক্ষমতা গ্রহণের পর এই অভিযান শুরু হয়। বিবিসির খবরে বলা হয়, ফিলিপাইনের সিনেট শুনানিতে এসব কথা বলেছেন দেশটির পুলিশ প্রধান রোনাল্ড ডেলা রোসা। দেশটিতে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে নিহতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক মহলে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট দুতের্তে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই মাদকবিরোধী এই অভিযানে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেন। মাদক নির্মূলের প্রত্যয় নিয়ে তিনি এসব অভিযানে হত্যার ঘটনায় ব্যক্তিগতভাবে দায়মুক্তি দিবেন বলেও জানান। এসব অভিযানে মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকলে তা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে দুতের্তের পদক্ষেপের সমালোচনা করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। জাতিসংঘের পক্ষ থেকেও সমালোচনা করা হয় এর। যুক্তরাষ্ট্রও এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগের কথা জানায়। পরে দুতের্তে জাতিসংঘের সমালোচনা করেন এবং প্রয়োজনে জাতিসংঘ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেন। এই পরিস্থিতিতে যৌথ তদন্ত শুরু করেছে ফিলিপাইন সিনেট। শুনানি পরিচালনা করছেন সিনেটর লেইলা ডি লিমা। তিনি মৃত্যুর ঘটনা ‘নজিরবিহীনভাবে’ বেড়ে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যার আহ্বান জানান কর্তৃপক্ষের কাছে। এই শুনানিতেই হাজির হন ফিলিপাইন পুলিশের প্রধান ডেলা রোসা। তিনি জানান, অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ১,৯১৬টি মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশের অভিযানে নিহতের সংখ্যা ৭৫৬। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ডেলা রোসা বলেন, তদন্তের অধীন সব মৃত্যুর ঘটনা মাদকসংশ্লিষ্ট নয়। ডাকাতি বা ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জের ধরে ৪০টির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। তবে মাদকবিরোধী অভিযানে মাদকসেবী বা মাদক ব্যবসায়ীদের হত্যার কোনো ঘোষিত নীতি নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পুলিশ কসাই নয়’। তিনি আরও জানান, মাদক ব্যবসায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অভিযোগে প্রায় তিনশ পুলিশকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ডেলা রোসা। সিনেটর ফ্র্যাংক ড্রিলন রয়টার্সকে বলেন, মৃতের সংখ্যা অত্যন্ত ‘উদ্বেগজনক’ এবং এটা এক ধরনের ‘শীতল প্রভাব’ ছড়িয়ে দিয়েছে।