টানা ৫১ দিন পর কাশ্মীর উপত্যকার অধিকাংশ এলাকা থেকে কারফিউ প্রত্যাহার করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার এক কমকর্তা বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। গত ৯ই জুলাই এক স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র বিদ্রোহীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দমনে এ কারফিউ জারি হয়েছিল। তারপর থেকে গত ৫১ দিন ধরে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের গোটা কাশ্মীর উপত্যকায় কারফিউ চলছিল। এ সময় উপত্যাকার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবাদ ঠেকাতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অ্যাকশনে অন্তত ৭০ জনের মৃত্যু হয় যার মধ্যে রয়েছে দুজন পুলিশও। ঘোষণায় জানানো হয়, দক্ষিণ কাশ্মীরের উত্তেজনাপূর্ণ পুলওয়ামা জেলা ও রাজধানী শ্রীনগরের পুরণো শহর নওহাটায় এলাকায় (জামে মসজিদ) কারফিউ অব্যহত থাকবে। রবিবার সন্ধ্যায় উচ্চপদস্থ নিরাপত্তা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে খবর দিয়েছে কাশ্মীর ভিত্তিক ইংরেজি গণমাধ্যম গ্রেটার কাশ্মীর। অবশ্য, ভারত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ডাকা হরতাল অব্যহত রেখেছে। তারা আগামী ১লা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হরতাল চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে। কারফিউ প্রত্যাহারের পরও হরতালের কারণে জনজীবন স্বাভাবিক হচ্ছেনা সহসা। এদিকে কারফিউ প্রত্যাহারের পরই শ্রীনগরের বাটমালু এলাকায় এক দল যুবক মিছিল করেছে। তাতে পুলিশ বাঁধা দেয়ায় সেখানে আবারও সংঘর্ষ হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুল পরিমাণ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরেই কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনার চেষ্টা চলছিল। গতকাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক রেডিও অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘কাশ্মীরের প্রতিটি প্রাণহানি আমাদেরই প্রাণহানি। ঐক্য এবং মমতার মূলনীতি দিয়ে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করা হবে।’ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পরই প্রধানমন্ত্রীর এ মন্তব্য এল। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি দিল্লি থেকে পিটিআইকে এক সাক্ষাৎকারে বলেলেছেন, ‘জনগণ আলোচনার প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হলে আলোচনাকে প্রাতিষ্ঠানিক করতে হবে।’ উল্লেখ্য, গতকাল রাইজিং কাশ্মীরের এক খবরে বলা হয়, আগামী ৩রা সেপ্টেম্বর সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের শ্রীনগর যাওয়ার কথা রয়েছে। তার আগেই কারফিউ প্রত্যাহারের ঘোষণা এল। তবে এখনও ভারতবিরোধী রাজনীতিক সৈয়দ আলী গিলানীকে তার গৃহবন্দী রাখা হয়েছে। মিরওয়াইজ ওমর ফারুক ও ইয়াসিন মালিকসহ অন্যান্য বিরোধীদেরকেও আটক রাখা হয়েছে। ফলে কী বিষয়ে এবং কাদের সঙ্গে আলোচনার হবে তা নিয়ে সংশয় কাটছে না।