সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু ও খেঁটেখাওয়া মানুষদের নিয়ে পপাইস নিবেদিত ‘স্বদেশ ভাবনা’
-
Update Time :
শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৬
-
৮৮১
Time View
অসহায় সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু ও খেঁটেখাওয়া মানুষদের নিয়ে রাজধানী ঢাকার কমলাপুরে আজ আরজে সাইমুরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় রেডিও স্বদেশ ডটনেট এর বিশেষ আয়োজন পপাইস নিবেদিত ‘স্বদেশ ভাবনা’। আজ পরিচালিত হয় স্বদেশ ভাবনার ৩য় পর্ব। ভিন্নধর্মী এই আয়োজনে রাজধানী ঢাকার সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু, খেঁটেখাওয়া মানুষ এমনকি প্রতিভাবান মানুষদেরকে সবার সামনে তুলে আনার প্রচেষ্টা করা হয়। যারা সবসময় অলক্ষে থেকে যায়। রাত ১টায় স্বদেশ ভাবনার টিম কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌছানোর পরপরই বাড়তে থাকে আগ্রহী জনতার ভীড়। গত রাতে ছিন্নমূল কিছু মানুষকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পায় স্বদেশ টিম আর তাদের প্রতিভা অন্বেষণের ক্ষুদ্র চেষ্টা চালায়। এমন অভাবনীয় সাড়া পেয়ে খুবই অবাক হয় স্বদেশ টিম । আসলে আমরা যাদের টোকাই বা পথশিশু বলি তাদেরও যে একটা শৈল্পিক মন আছে তা কখনও ভেবে দেখিনা।তারাও যে পড়ালেখা করে মানুষের মত মানুষ হতে চায় তা আমরা হয়তো অনেকেই জানি না।তাদের গায়কী প্রমান করে একটু সুযোগ পেলে তারাও মেলে ধরতে পারে নিজেদের। মুজিব পরদেশী, ও টুনির মা তোমার টুনি কথা শোনেনা,সজনী, টোকাই, বোরকা পরা মেয়ে পাগল করেছে ইত্যাদি গানগুলো উঠে আসে তাদের কণ্ঠে। স্বদেশ পরিবার কিছু পথশিশুদের সাথে কথোপকথনে জানতে পারে অসহায় এই শিশুদের মনোবাসনা যা তারা হয়ত কখনো কাওকে সেভাবে বলতে পারেনি কিংবা তারা তাদের বাবা মায়ের সীমাবদ্ধতার কাছে পরাজয় শিকার করে আজ কেউ চানাচুর বিক্রেতা,কেউ ফেরিওয়ালা, কেউবা পথে ঘুরে ঘুরে চরম কষ্টে দিনানিপাত করছে। যাযাবর জীবনযাপন আর রাতের কালো অন্ধকারই যেন তাদের সংসার । বেশিরভাগ পথশিশুর পিতা-মাতা নেই। অনেক সময় তাদের পিতা-মাতা থাকলেও তাদের পরিচয় পাওয়া যায় না। আসলে তাদের রাস্তায় জন্ম হয়, রাস্তায় জীবন কাটে এবং অবশেষে রাস্তায় তাদের মৃত্যু হয়। অনেকের পিতা-মাতা আছে কিন্তু যোগাযোগ নেই। আমাদের দেশের শিশুর মধ্যে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে এই পথশিশুরা। যারা সাধারণত টোকাই নামে বেশি পরিচিত। এ সকল শিশু রাস্তা, আঁস্তাকুড় ও অন্যান্য স্থানে জিনিসপত্র কুঁড়িয়ে বেঁচে থাকে। এসব শিশুরা সাধারণত দারিদ্র, দাম্পত্য-কলহ, বিবাহ-বিচ্ছেদ, পরিবার থেকে পলায়ন ও যৌন নিপীড়নের কারণেই রাস্তায় নিক্ষিপ্ত হয় । পথশিশুরা বাবা-মায়ের আদর-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আদর-সোহাগ কি জিনিস তা তারা বুঝে না, জানে না। জীবনের প্রতি তাদের মায়া না থাকায় তারা বিপদগামী হয়ে উঠে। সমাজে বাবা-মায়ের আদরের অন্যান্য সন্তানের মতো পথশিশুদের যেসময়ে স্কুলে যাওয়ার কথা সেসময় তারা অনাদর ও অবহেলায় রাস্তায়, ফুটপাতে, স্টেশনে, পথেঘাটে, বনবাদারে ঘুরে বেড়ায়। সবকিছু থেকে বঞ্চিত হওয়ায় তারা এক সময় বিদ্রোহী, সন্ত্রাসী, মাস্তান, টোকাই হয়ে বড় হতে থাকে। আদর-ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত এই শিশুরা সমাজের সম্পদ। তাদেরকে যথাযথ আদর ভালোবাসা দিয়ে প্রতিপালন করলে তারা সমাজে বিদ্বেষী না হয়ে সমাজের বন্ধু হতে পারে। বিকশিত করতে পারে তাদের জীবন ব্যবস্থা। আর সে লক্ষে স্বদেশ মাল্টিমিডিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আরজে সাইমুর রহমান ঘোষণা করেন,এসকল পথশিশুর উন্নয়নে তাদের অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন করা হবে।পাক্ষিকভাবে এ আয়োজন সম্পন্ন করবে স্বদেশ পরিবার। অনেকেই হয়তোবা পএিকার এই কলামটুকুকে নিছক একটা ছোট আর্টিকেল ভাববেন, আসলে স্বদেশ টিভির ইউটিউব চ্যানেলে গেলে বোঝা যায় কত শত প্রতিভা আজ পথে পথে ঘুরে বেড়ায়। আমরা তাদের দিকে ফিরেও তাকাই না। আমাদের অলক্ষ্যে এই সব প্রতিভা হয়তো একদিন বিপথে পা বাড়াবে অথবা অকালে ঝরে যাবে আর আমরা বলবো এই অভাগার দেশে কোন সৃজনশীল মানুষ জন্মাল না। আসলে আমরাই চাই না কোন পথের শিশু তার প্রতিভার বিকাশ করুক। অনেকে নিজেকে ধিক্কারও দেয় এবং বলে আমরা কি পারবনা এই দেশ থেকে অভাব দূর করতে? কেন এমন হবে এই পথ শিশুদের জীবন? কেনো নেই তাদের স্বাভাবিক জীবন? অনেকে এসব প্রশ্নে উত্তর খুঁজছি। এই কথাগুলো আমরা সবাই কম-বেশি জানি এবং বুঝি। এরপরেও কেউ সহযোগিতার হাত বাড়াই না। চলুন সবাই সহযোগিতার হাত বাড়াই। আপনার দেখাদেখি অন্যরাও সহযোগিতা করবে। তেলা মাথায় বার বার তেল না দিয়ে এইসব পথ শিশুদের উপর যত্নশীল হলে এবং নজর দিলে তবেই তো বদলাবে স্বদেশ।
Please Share This Post in Your Social Media
More News Of This Category