হারবাল চিকিৎসা জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র ডা.আলমগীর মতি ও মর্ডাণ হারবাল

সাইমুর রহমান:
সেই ১৯৮১ সাল। এখন ২০১৫ সাল। দীর্ঘ ৩৪ বছর। দীর্ঘ এই সময় ধরে দেশীয় ওষুধ শিল্পখাত উন্নয়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। এখনো তিনি সংগ্রাম করছেন দেশের চিকিৎসা সেবাখাত উন্নয়নে। তিনি হলেন হারবাল ওষুধ শিল্পখাতের নিবেদিত প্রাণ আন্তজার্তিক খ্যাতিসম্পন্ন হারবাল চিকিৎসক ও গবেষক ডা. আলমগীর মতি। মর্ডাণ হারবাল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
শরীয়তপুরের কৃতী সন্তান তার মেধা, দক্ষতা, সৎ মনোবলের কারণেই আজ তিনি দেশের প্রভাবশালী সফল ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা। বিশিষ্ট হারর্বালিষ্ট, গবেষক, দেশপ্রেমিক ও মর্ডাণ হারর্বাল গ্রুপের চেয়ারম্যান আলমগীর মতি বর্তমানে ভেষজ গুণাবলী সমৃদ্ধ ওষুধ ও খাদ্যসামগ্রী নিয়ে গবেষণা ও দেশের চিকিৎসা সেবাখাত উন্নয়নে কাজ করছেন।আজ শুনব এই ব্যবসায়ীর সেই সব সাফল্যের কথা। ডা. আলমগীর মতি ১৯৫১ সালে ১ জানুয়ারি শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম জন্ম গ্রহণ করে। শৈশব-কিশোর বেলা কেটেছে এই গ্রামে। ছোট  বেলা থেকেই তিনি ছিলেন মেধাসম্পন্ন, ও প্রকৃতিমনা। পারিবারিক ভাবেই ডা: আলমগীর মতি ঔষুধী গাছ চাষাবাদের মাধ্যমে বেড়ে উঠেছেন। সেই  থেকে গাছ-গাছড়ার প্রতি তার নিদারুণ ভালোবাসা সৃষ্টি হয়।  ডা. আলমগীর মতি ১৯৭০ সালে লোনসিং বিদ্যালয়  থেকে  মেট্রিক পাশ করে ভর্তি হন নারায়নগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজে। এই কলেজ থেকে ১৯৭৩ সালে ইন্টারমেটিয়েট পাশ করে ভর্তি হন বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে। এখান থেকে ১৯৮১ সালে ডি.এই্চ.এম.এস ডিগ্রী লাভ করেন। সেই বছর তিনি কোনো চাকুরি না খোঁজে ব্যবসায় নেমে পড়েন। ব্যবসা কালিন ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এইচএমএস ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৯৪ সালে ইন্ডিয়ান বোর্ড অব অল্টারনেটিভ মেডিসিন থেকে এমডি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে চায়না থেকে নিউরো ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০০৬ সালে ভারত কর্তৃক সম্মান সূচক ডক্টর অব ফিলোসোফী ডি. ফিল প্রাপ্ত হন। তিনি হারর্বাল বিষয়ে এম ফিল করেছেন। তিনি এখন একাধারে সফল হারবাল চিকিৎসক, গবেষক, সফল ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা।
ডা; আলমগীর মতি অক্লান্ত পরিশ্রম করে ও নানা বাধা বিপত্তি উপেক্ষা তিল তিল করে গড়ে তুলেন হারর্বাল গ্রুপ। বর্তমানে দেশীয় চিকিৎসা সেবায় মডার্ণ হারবালের তুলনা নেই। স্বনামধন্য এ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের রেজিস্টারভূক্ত প্রথম হারবাল ওষুধ প্রতিষ্ঠান। মর্ডাণ হারবাল এখন আর কোনো ওষুধ প্রতিষ্ঠান নয়  মর্ডাণ হারর্বাল এখন একটি গ্রুপ অফ কোম্পানির নাম।  ডা: আলমগীর মতি স্বপ্নের ফসল এই মর্ডাল হারর্বাল গ্রুপ। এই প্রধান বর্তমানে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি মাধ্যমে দেশের বেকারত্ব দূর করণে কাজ করে যাচ্ছেন। মর্ডান হারর্বাল গ্রুপের বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে ডা; আলমগীর মতি বলেন, মর্ডাণ গ্রুপের আওতায় বর্তমানে ৬টি প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে যাচ্ছে। এগুলো হলো, হারবাল, ইউনানী, আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথি, টয়লেট্রিজ, কনজ্যুমার ফুড প্রতিষ্ঠান সমূহ। মর্ডাণ হারবাল গ্রুপের রয়েছে ৩০০ টিরও বেশি নিউট্রিশন (পুষ্টি), মেডিসিন (ঔষধ), ওয়েট ম্যানেজমেন্ট (ওজন নিয়ন্ত্রণ), এনার্জি এবং ফিটনেস (শক্তি ও উদ্যম), পারসোনাল কেয়ার (ব্যাক্তিগত পরিচর্যা) ওষুধ ও পণ্যসহ উচ্চগুণগত মানসম্পন্ন অন্যান্য সেবাসমূহ। হারর্বাল চিকিৎসা প্রসঙ্গে ডা: আলমগীর মতি বলেন, মর্ডানের হারর্বাল চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পূর্ণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত। মর্ডান হারর্বাল গ্রুপের সকল পণ্যই জনস্বাস্থের কথা বিবেচনা করে বাজারে আনা হয়েছে। আমাদের পণ্যগুলো ওষুধ প্রশাসন কর্তৃক পরীক্ষিত এবং বিএসটিআই অনুমোদিত। আমাদের একটি শ্লোগান আছে- সুস্বাস্থ্য প্রতিদিন, কি করবেন জেনে নিন।’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আমরা  দেশের চিকিৎসা সেবা ও দেশীয় ওষুধ শিল্পখাত উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।

বিদেশে মর্ডাণ হারবাল গ্রুপের ওষুধ ও পণ্য রপ্তানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইউ কে, কানাডা সহ মধ্যপ্রাচ্যের সকল দেশে রফতানি আমাদের ওষুধ রফতানি করে থাকি। যার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে দেশের অর্থনৈতিক খাতে যোগ হচ্ছে।  আগামীতে  বাংলাদেশের দেশীয় ওষুধ শিল্পখাত উন্নয়নে বর্হি:বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে  রফতানি লক্ষ্যে আমাদের কর্মকর্তা কাজ করে যাচ্চেন। দেশ ও জাতীর কল্যাণে মর্ডাণ গ্রুপের অবদান প্রসঙ্গে তিনি বলেন,  মডার্ণ হারবাল গ্রুপ শুধু একটি কোম্পানী নয়, নিশ্চিত আয়ের একটি উৎস ।  বেকারত্ব দূর করণে একটি প্লাটফম মর্ডাণ হারর্বাল গ্রুপ। ৬৪ টি জেলাসহ সারা বাংলাদেশে স্বউদ্যোগী স্বতন্ত্র ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে দেশব্যাপী মডার্ণ হারবাল তাদের পণ্য বিপণন ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে যাচ্ছে । এছাড়া সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ ও হতদারিদ্র মানুষের বিনামূলে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছি।
উল্লেখ্য, বিশিষ্ট এই চিকিৎসাবিদ  তার নিজ এলাকা শরীয়তপুরে হার্বাল ইউনানী হাসপাতাল স্থাপন করেছেন। স্থাপন করেছেন শরীয়তপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং শরীয়তপুরবাসীদের আনন্দ-বিনোদন এর জন্য গড়ে তুলেছেন মর্ডাণ ফ্যান্টাসি কিংডম। এই পার্কে গরীব শিশু ও গ্রামবাসীদের বিনোদনের জন্য আর শরীয়তপুরের বাইরের যেতে হয় না। মহিলাদের জন্য সেলাই প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেছেন । তার এই পার্কের মাধ্যমে অনেক যুবক-যুবতীর আত্মকর্মসংস্থান এর সুযোগ হয়েছে। তিনি রচনা করেছেন বিভিন্ন গবেষণামূলক ও চিকিৎসা সেবা মূলক গ্রন্থ । তার রচিত প্রতিটি গ্রন্থসমূহ বৈশিষ্ট্য চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রিক। বিভিন্ন কাজের জন্য পেয়েছে আন্তজার্তিক পুরস্কার। পেয়েছেন জাতীয় পর্যায়ে সম্মননা অর্জন। এমনকি বিভিন্ন সাংগঠনিক সম্পৃক্ততায় রয়েছে  ডা; আলমগীর মতির সুনাম।  এছাড়াও সমাজসেবামূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৫-১৬ লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল ৩১৫ বি-২ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার  হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পেয়েছেন হ্যানিম্যান পদক। বিভিন্ন এতিমখানা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে আর্থিকভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে তিনি ।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *