নবাব সিরাজদৌলা আলেয়াকে প্রশ্ন করেছিলেন, “তোমার নাম, পরিচয়”? আলেয়ার জবাব, “আমার নাম, পরিচয় কলঙ্কের কালিতে ঢাকা পড়েছে মহারাজ”। আলেয়ার জবাবে ছিল হতাশা, ক্ষোভ, দেশপ্রেম। আর বিএনপি’র পরিচয় ঢাকা পড়ছে রাজাকারের কলঙ্কিত আদর্শে। বিএনপি হলো রাজাকারের অভয়ারণ্য। বেগমের অর্থলিপ্সা ও মানুষের প্রতি অবজ্ঞা তাকে জামায়াত নেত্রী হিসাবে চিহ্নিত করছে।
দোর্দণ্ড প্রতাপশালী সৈরশাসক মেজর জিয়া ক্ষমতার ভিত পোক্ত করতে জামায়াতসহ ধর্মীয় দলগুলোকে রাজনীতি করার অধিকার দিয়েছিল। আজ সময়ের প্রবাহে সেই ধর্মান্ধ জামায়াতেই বিলীন হতে চলছে তার সাধের রাজনৈতিক প্লাটফরম। আদর্শের ছিটেফোঁটাও নাই মেজর জিয়া বা বেগম জিয়া চরিত্রে। দেশ ও মানুষ এদের রাজনীতির উপজীব্য ছিল না বরং পাকিস্তানি প্রভুদের কৌশল বাস্তবায়নই ছিল মূল লক্ষ।
এ দেশে পাকিস্তানি আদর্শের কু-সন্তান হলো জামায়াত-শিবিরের ধর্মান্ধ মৌলবাদিরা, জন্ম থেকেই এরা চিন্তা-চেতনা ও ভাবাদর্শে পাকিস্তানি। বেগম জিয়া সেই ভাবাদর্শের সঙ্গীদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অভিষিক্ত করে ২০০১ সালের নির্বাচনে জিতে। ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের সাথে সরাসরি বেঈমানি করে, ১৬ কোটি মানুষের চেতনার মূলে কুঠারাঘাত করে রাজাকারদের মন্ত্রীত্বের মর্যাদা দেয়। ভূলুণ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধের সব অঙ্গীকার, লজ্জায় মাথা কাটা যায় একাত্তরের চেতনা।
দেশে তো বটেই এমনকি অনেক বন্ধু রাষ্ট্রও বহুবার, বহু ভাবে বিএনপিকে জামায়াত ত্যাগের পরামর্শ দেয়। এমনকি বিএনপি’র অনেক মুক্তিযোদ্ধাও জামায়াতের সংশ্রব ছাড়তে তাগাদা দেয়। কিন্তু ঐ যে কথায় বলে, চোরে না শোনে ধর্মের কথা, ঠিক তেমনি বিএনপি নেত্রী ও তার কুপুত্রের সীমাহীন লোভের কারনে তা হয়ে ওঠেনি। মা-বেটার দৃষ্টি জামায়াতের বিশাল অর্থভাণ্ডারে। এখন মা-বেটার আর্থিক খায়েশ মেটাচ্ছে জামায়াত, আর তাই জামায়াতের কাছে ধীরে ধীরে বিক্রি হচ্ছে বিএনপি নামক রাজনৈতিক প্লাটফরম।
পত্রিকান্তরে বহুল প্রচারিত যে, বেগম জিয়ার মিটিং-এ বিএনপি নেতারা নিজের মোবাইল ফোন সভাকক্ষে নিতে পারে না, রেখে যেতে হয় কর্মচারীদের কাছে। পক্ষান্তরে জামায়াত নেতারা মোবাইল নিয়েই প্রবেশ করে। বেগমের কাছে মূল্যবান দু’টি জিনিস, জামায়াতের অর্থ ও পাকিস্তানি আদর্শ। সেই গানটি মনে পড়ছে, “আমি সব কিছু ছাড়তে পারি, তোমাকে ছাড়তে পারবো না”। অদুর ভবিষ্যতে বিএনপি থাকলেও নেতারা হবে সব জামায়াতের।