মহাহিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিএজি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)এর হিসাবের মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকার গড়মিল আছে। সেটি সমাধানে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত জাতীয় বাজেট সংক্রান্ত জাতীয় কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের মিটিং শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান খোদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়ন অত্যন্ত সন্তোষজনক। রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে। গত বছরের এই সময়ের তুলনায় চলতি বছরের এই সময়ে ২২ শতাংশ বেশি রাজস্ব আহরিত হয়েছে। তবে মহাহিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিজিএ) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)এর হিসাবের মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকার গড়মিল আছে। সেটি সমাধানে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কি কারণে এ তথ্যে গড়মিল তা এ কমিটি উদ্ঘাটন করবে। একই সঙ্গে পরববর্তীতে যেন এ ধরনের সমস্যার সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে কাজ করবে।
অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ অর্থবছরের আদায় করা সরকারের প্রায় ৪৭ হাজার ২২৩ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ের হিসাব মিলছে না। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দাবি করছে, এ পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয়েছে। যথারীতি তা সরকারি কোষাগারে জমা দেয়া হয়েছে।
কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও মহাহিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিজিএ) বলছে, এই অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা হয়নি। এনবিআরের দাবি সঠিক ও বাস্তবসম্মত নয়।
এভাবে গত দুই অর্থবছরে এনবিআর অতিরিক্ত রাজস্ব আয়ের দাবি করেছে। কিন্তু খোদ অর্থ মন্ত্রণালয়ই তা মানতে নারাজ। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গত ৫ বছরে রাজস্ব আদায়ের যে খাতভিত্তিক হিসাব দেয়া আছে, তার সঙ্গেও মিল নেই এনবিআরের আদায়ের।
আয়ের এই গরমিল নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ট্রেজারিতে টাকা প্রবেশ না করা পর্যন্ত তা রাজস্ব হিসাবে দেখানো উচিত নয়। কিন্তু বাস্তবে এনবিআর তা দেখাচ্ছে।
সূত্রমতে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত এনবিআরের হিসাবে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৭৯ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা। অপরদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে আদায় দেখানো হয়েছে ৭৬ হাজার ৩৯৭ কোটি টাকা। শুধু এই ৭ মাসেই অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এনবিআরের রাজস্ব পার্থক্য দাঁড়িয়েছে ৩৫৭১ কোটি টাকা।