মডেল অভিনেত্রী মৌনিতা খান ঈশানার বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর হাকিম মো. রায়হান-উল-ইসলামের আদালতে চার্জ শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এ সময় আদালতে আসামি ঈশানা ও মামলার বাদি মারুফ খান প্রেম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতে বাদির আনীত অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন বানোয়াট উল্লেখ করে আসামিপক্ষের আইনজীবী অব্যাহতি চান। অন্যদিকে বাদিপক্ষ আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সঠিক সে জন্য তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের জন্য নিবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে মামলার অভিযোগ থেকে আসামিকে অব্যাহতি দেন।
আদালত তার আদেশে উল্লেখ করেন, একই ঘটনায় দুটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় আসামি কর্তৃক বাদির মানহানি করার মতো কোনো তথ্য বা উপাদান বিদ্যমান না থাকায় আসামিকে এ মামলার দায় থেকে অব্যাহতি (ডিসচার্জ) প্রদান করা হলো।
আগে গত ২৫ জুলাই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় বাদির নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করে ইশানাকে অব্যাহতি দিয়েছেন বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক। ওই মামলায় বাদী মারুফ খান প্রেম ট্রাইব্যুনালে পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রির্পোট) বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন দাখিল করে ছিল। বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনাল বিচারক কে এম শামসুল আলমের আদালতে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ বিষয়ক শুনানির দিনে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল নথি পর্যালোচনা করে বাদীর নারাজি আবেদন নাকচ করে পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন (ফাইনাল রির্পোট) গ্রহণ করে ইশানাকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করেন।
ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক তার আদেশে উল্লেখ করেছেন, মামলাটি আমলে গ্রহণের উপযুক্ত উপাদান না থাকায় নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করা হলো। পুলিশ রিপোর্ট গ্রহণ করে অভিযুক্তকে অব্যাহতি করা হলো এবং মামলা নথিভুক্ত করা হলো।
উল্লেখ্য-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় গত ৬ জুন ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই মো. নাসির উদ্দিন সরকার। প্রতিবেদনে মামলাটি সঠিক আইনে করা হয়নি এবং আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামিকে অব্যাহতি দানের প্রার্থনা করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ বিষয়ে পরবর্তী আদেশ দানের জন্য নথিটি ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে প্রেরণ করেন।
এ মামলায় গত ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট থেকে ফৌজদারি বিবিধ মামলা নং ১২৬৭৭/১৬ মোতাবেক জামিন পান এই মডেল অভিনেত্রী ঈশানা। পরে তার আইনজীবীর ম্যাধমে ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন নেন। ঈশানা গত ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের নির্দেশে মহানগর হাকিম মো. মারুফ হোসেনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত শুনানি শেষে তাকে দশ হাজার টাকার মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।
একই ঘটনায় মানহানির অভিযোগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি মৌনিতা খান ইশানার বিরুদ্ধে আদালতে মানহানি মামলা ও গত ১ মার্চ উত্তরা পশ্চিম থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা দায়ের করেন মামলার বাদী প্রযোজক অভিনেতা মারুফ খান প্রেম।
মামলায় বাদি উল্লেখ করেন, শুটিং সেটে তার অনুপস্থিতে ঈশানা তাকে গালাগালি করেছে, সেইসঙ্গে নিজস্ব ফেসবুকে একটি মানহানিকর স্ট্যাটাস পোস্ট করে, যাতে বাদির সুনামহানি সামাজিক ও আর্থিকভাবে এক কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে এ মামলা দায়ের করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ২০০৮ সালের লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রথম রানার আপ হয়েছিলেন মৌনিতা খান ঈশানা।