আবাসিক পর্যায়ে প্রতি ইউনিট (এক হাজার লিটার) পানির দাম এক দশমিক ৩৯ টাকা বাড়িয়ে নয় টাকা করা হয়েছে। আর অনাবাসিক (শিল্প ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে) সংযোগে তিন দশমিক ৪৪ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৫ টাকা।চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কে এম ফজলুল্লাহ বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নতুন বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ মূল্য কার্যকর হয়েছে।দাম বাড়ানোর অনুমতি চেয়ে গত বছর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল চট্টগ্রাম ওয়াসা। এর প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় প্রতি ইউনিট পানির নতুন দর ঠিক করে দেয় বলে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান।চট্টগ্রাম ওয়াসার অধীনে সংযোগ লাইন রয়েছে ৬৩ হাজার ৫৪৫টি। এর মধ্যে ৮৮ শতাংশ আবাসিকে এবং ১২ শতাংশ সংযোগ অনাবাসিকে।পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন-১৯৬৬ এর ২২(২) ধারা অনুযায়ী ওয়াসা নিজেই পানির দাম বছরে একবার করে পাঁচ শতাংশ হারে বাড়াতে পারে। এর বেশি বাড়ালে তাদের সরকারের অনুমোদন নিতে হয়। ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারিতে পানির দাম পাঁচ শতাংশ বাড়িয়ে আবাসিকে প্রতি ইউনিটে সাত দশমিক ৬১ টাকা এবং অনাবাসিকে ২১ টাকা ৫৬ পয়সা করা হয়।
এরপর অভ্যন্তরীণ ক্ষতি কমানোর যুক্তি দেখিয়ে গত ৭ ডিসেম্বর আবাসিকে প্রতি ইউনিটে ২ দশমিক ৩৯ টাকা বাড়িয়ে ১০ টাকা এবং অনাবাসিকে ১০ দশমিক ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৩২ টাকা করার জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আবারও প্রস্তাব পাঠানো হয়।মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চট্টগ্রাম ওয়াসার চিঠিতে বলা হয়, শ্রমিক কর্মকর্তাদের বেতন-ভাতা, বিদ্যুৎ বিলসহ আনুষঙ্গিক খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে ওয়াসার এক ইউনিট পানি উৎপাদনে খরচ পড়ে ১৫ দশমিক ০৬ টাকা। আর গড়ে বিক্রি হয় ৯ দশমিক ২৭ টাকায়।ওয়াসার চট্টগ্রাম ওয়াটার সাপ্লাই ইমপ্রুভমেন্ট ও স্যানিটেশন প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের কারণে কিস্তি পরিশোধ করতে হয় বলে প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য নাজুক অবস্থায় পড়েছে বলে জানানো হয় ওই চিঠিতে।দাম বাড়ানোর যুক্তিতে আরও বলা হয়, ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে চট্টগ্রাম ওয়াসার মোট ব্যয় হয় ৭৭ দশমিক ৫৪ কোটি টাকা, যার মধ্যে বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় ৩১ দশমিক ৫৬ কোটি টাকা ও পানি উৎপাদনে বিদ্যুতের জন্য ব্যয় হয় ২৯ দশমিক ৯২ কোটি টাকা।অন্যদিকে পানি বিক্রি থেকে আয় হয়েছে ৫৩ দশমিক ২৯ কোটি টাকা। আয় ও ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্য থাকছে ২৪ দশমিক ২৫ কোটি টাকা।ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর ওই উদ্যোগের সমালোচনা করে সে সময় কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেছিলেন, ওয়াসার পানির দাম বাড়াতে গণশুনানির নিয়ম আছে। কিন্তু তারা তা না করেই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।