আরিফ উদ্দিন, গাইবান্ধাঃ গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলা আ’লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও যুবদলের ৪ নেতাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে চেষ্টা চালিয়েও তাদের কোন সন্ধান না পাওয়ায় তাদের পরিবারের লোকজন চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। তবে তাদের তুলে নেয়া ও আটকের ব্যাপারে পুলিশ, র্যাব বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা কিছুই জানেন না বলে জানানো হয়েছে।
সংশি¬ষ্ট পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাদুল্যাপুর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি দামোদরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মনোয়ারুল হাসান জীম মন্ডল, নলডাঙ্গা ইউনিয়ন আ’লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাইদুল ইসলাম প্রিন্স, দামোদরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদেক (৩৫) ও নলডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শফিউল ইসলাম শাপলা (৩২) কে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মনোয়ারুল হাসান জীম মন্ডলের বাবা গোলাম মোস্তফা ডিপটি বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ১০টায় জিম সাদুল্যাপুর উপজেলা শহরের কৃষি ব্যাংক মোড় থেকে তার ছেলে মটরসাইকেলে চড়ে নলডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম নয়নের বাড়িতে যাওয়ার জন্য রওনা হয়। পথে লালবাজার এলাকা থেকে তিনি ছাত্রলীগ নেতা সাদেকুল ইসলাম সাদেককে তার মটর সাইকেলে তুলে নেয়। এরপর থেকে তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নেয়া হচ্ছে কিন্তু তাদের কোন খোঁজ মিলছে না। জীম মন্ডলের পরিবারের লোকজনের ধারণা তাদের তুলে নেয়া সাদা পোশাকধারী কোন আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য হতে পারে।
নিখোঁজ মাইদুল ইসলাম প্রিন্সের ভাই নলডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম নয়ন বলেন, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাদা পোশাকে আইনশৃংখলা বাহিনীর পরিচয়ে কয়েক ব্যক্তি নলডাঙ্গা রেলগেট এলাকা থেকে তার মটর সাইকেলসহ প্রিন্সকে তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু তার কোন অনুসন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। এব্যাপারে র্যাব, পুলিশ, ডিবি পুলিশের সাথে কথা হয়েছে কিন্তু তারাও তার সম্পর্কে কোন তথ্য দিতে পারেনি।
এছাড়া নিখোঁজ শফিউল ইসলাম শাপলার বাবা আমিনুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকাল ১১টায় নলডাঙ্গা কাচারী বাজার এলাকায় তার ছেলে অবস্থান করছিল। এসময় হঠাৎ করে কয়েকজন তাকে আইডি কার্ড দেখিয়ে একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যর পরিচয় দেন। পরে তাকে তুলে নিয়ে যায় তারা।
এ ব্যাপারে সাদুল্যাপুর উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহারিয়া খাঁন বিপ¬ব জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি বেশ দুঃখজনক। তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তারা সব জায়গায় খোঁজ খবর অব্যাহত রেখেছেন বলে জানিয়েছেন।
সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরহাদ ইমরুল কায়েস বলেন, তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন। ৩ জন অভিভাবক তাদের ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, এব্যাপারে পুলিশ সুপারসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।
গাইবান্ধা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহীনির পরিচয় দিয়ে তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তিনি জেনেছেন। এব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, পুলিশের কেউ তাদেরকে তুলে নিয়ে যায়নি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।