সিলেটের বিশ্বনাথে এক গৃহবধূ নিজের একটি কিডনি দিয়েও বাঁচাতে পারছেন না স্বামীকে। প্রয়োজনীয় অর্থাভাবে দু’চোখে অন্ধকার দেখছেন এ গৃহবধূ। কিডনি দানের বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করা গৃহবধূ বিলকিছের স্বামী উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের ঘাসিগাঁও গ্রামের মৃত আফরুজ আলীর পুত্র আতিকুর রহমান (৪৭)। জানা যায়, সৌদি আরব প্রবাসী আতিক ২০১৬ সালের ১৪ জানুয়ারি রাতে সেখানে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে সৌদি কিং আবদুল আজিজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত বলে চিকিৎসকরা জানান। চিকিৎসা চলাকালীন তিনি কিডনি রোগে আক্রান্ত হন। এ অবস্থায় তার দুটি কিডনিই বিকল হয়ে পড়লে তাকে ডায়ালাইসিস দেয়া হয়। সেখানে ১মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর ২০১৬ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি দেশে চলে আসেন। দেশে ফেরার পর পর্যায়ক্রমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল, ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সর্বশেষ, ২০১৬ সালের ২৩শে মার্চ তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে সপ্তাহে ৩ বার ডায়ালাইসিস দেয়া হতো। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে বাঁচাতে কিডনি সংযোজনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এ সময় তার স্ত্রী বিলকিছ বেগম (৩৭) জীবনের মায়া ত্যাগ করে নিজের একটি কিডনি স্বামীকে হাসি মুখে উপহার দেন। বিলকিছ আরো জানান, ডায়ালাইসিস ও কিডনি ট্রান্সফারসহ চিকিৎসা ব্যয় হয়েছে প্রায় ১২ লাখ টাকা। অপারেশনের পর থকে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকার ওষুধ ব্যবহার করতে হয়। নিজেদের ভিটে বিক্রির টাকা ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা থেকে আসে এ টাকা। বর্তমানে সেই কিডনিতে ভাইরাসের কারণে সমস্যা দেখা দেয়ায় নতুন করে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। কিন্তু তাদের হাতে নেই একটি টাকাও। মাত্র ১লাখ ৫০ হাজার টাকার ব্যবস্থা হলে কিডনিটি আবার সচল হবে আতিকের। এমনটাই জানালেন অসহায় বিলকিছ। আর তাতে করে ফের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরবেন তার স্বামী এবং হাসি আনন্দ ফিরে আসবে তাদের স্কুলপড়ুয়া ৪ সন্তানসহ ৬ সদস্যের পরিবারে। এ জন্য তিনি সমাজের হৃদয়বান বিত্তশালী মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন।