ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের কাশ্মীর সংহতি দিবস পালন শিষ্টাচার বহির্ভুত এবং এটি ভারত-পাকিস্তানের দ্বি-পাক্ষিক বিষয় বাংলাদেশে টেনে আনার রাজনৈতিক অপকৌশল বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
তিনি আজ রোববার সচিবালয়ে ঢাকায় কাশ্মীর সংহতি দিবস পালন সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
পাকিস্তান হাইকমিশনের ‘কাশ্মীর সংহতি দিবস’ পালনে বিস্ময় প্রকাশ এবং এর নিন্দা জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পাটির নেতৃবৃন্দ। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, জম্মু ও কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের বক্তব্য হাস্যকর। নেতৃবৃন্দ আজ পৃথক বিবৃতিতে এ প্রতিক্রিয়া জানান।
বাংলাদেশে গণহত্যায় মাফ না চেয়ে কাশ্মীরের প্রতি দরদ মায়াকান্না মাত্র উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে বাঙালিদের ওপর নির্মম বর্বরতা ও গণহত্যার অপরাধে মাফ না চেয়ে ক্রমাগত সাফাই গাওয়া ও যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেয়া পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর কাশ্মিরের প্রতি দরদ প্রকৃতঅর্থে মায়াকান্না ছাড়া কিছু নয়।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানি শাসকদের ইতিহাস বাঙালিসহ অন্যান্য জাতিসত্ত্বার ওপর নির্যাতনের ইতিহাস।’ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি আজ এক যুক্ত বিবৃতিতে পাকিস্তান হাইকমিশন কর্তৃক ‘কাশ্মীর সংহতি দিবস’ পালনে বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং নিন্দা জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পাকিস্তান হাইকমিশন কাশ্মীর প্রশ্নে বাংলাদেশের অবস্থান ভাল করেই অবহিত। তার বিপরীতে বাংলাদেশে বসে এ ধরনের দিবস পালন কূটনৈতিক, নীতি ও শিষ্টতা বহির্ভুত বিষয়।
বস্তুতঃ এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তান হাইকমিশন বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানকেই চ্যালেঞ্জ করেছে মন্তব্য করে তারা বলেন, ‘ অথচ এই পাকিস্তানই বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রাম, গণহত্যাসহ হত্যা, ধ্বংস, ধর্ষণ ও লুটের মাধ্যমে তাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল।’
তারা বলেন , এখনও পাকিস্তানে বেলুচিস্তানে সে দেশের মুক্তিকামী মানুষের বিরুদ্ধে পাকিস্তান বাংলাদেশের মতই হত্যা, ধ্বংস ও লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে। এই সকল বাস্তবতায় পাকিস্তান হাইকমিশন কর্তৃক ‘কাশ্মীর সংহতি দিবস’ পালন কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জম্মু ও কাশ্মীরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের বক্তব্যকে হাস্যকর অভিহিত করে বলেন, ‘পাকিস্তান জম্মু ও কাশ্মিরে গণহত্যা চলছে বলে যে অভিযোগ করছে- তা সত্যের অপলাপ এবং দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির অপপ্রয়াস।’
এর ফলে উপ-মহাদেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭১ সালে যে হানাদার পাকিস্তানী বাহিনী বাংলাদেশে যেভাবে নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছিল তাদের মুখে গণহত্যার অভিযোগ বেমানান।
প্রতিবেশীদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে সকল অমিমাংসিত সমস্যাগুলোর পথ খুঁজে বের করার জন্য পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহবান জানান এরশাদ।