বইকে নিয়ে এতো বড় মেলা, এতো আয়োজন আগে কখনও দেখিনি

বইকে নিয়ে এত বড় মেলা এবং মাসব্যাপি এত আয়োজন আগে কখনও দেখিনি, বললেন কবি লুস মারিয়া লোপেজ। তবে ভাষার জন্য বাংলাদেশের মানুষকে রক্ত ঝড়াতে হয়েছে বলেই হয়তো এটা সম্ভব হয়েছে।অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনে অংশ নিতে আসা পুয়ের্তোরিকোর কবি লুস মারিয়া লোপেজ বাসস’কে এ কথা বলেন।চার দিনব্যাপি সাহিত্য সম্মেলনের তৃতীয় দিনে লোপেজ এ স্বদেশ নিউজের প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, তার দেশেও ‘বুক ফেয়ার’ হয় কিন্তু তা এত দীর্ঘদিনব্যাপী নয়। তাছাড়া তার দেশে বা অন্য কোন দেশের বুক ফেয়ারেও তিনি দেখেননি বইকে ঘিরে মানুষের এত উচ্ছ্বাস, এত আবেগ এবং এ জন্য প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার মত ঘটনাও তার জানা ছিল না।

তিনি বলেন, তবে সব বয়সি মানুষের অংশগ্রহণ এবং বইকে ঘিরে একটি ফেস্টিভ্যাল মুড নিয়ে আসা বিষয়টি তার বেশ ভাল লেগেছে। বিশেষ করে মেলায় তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণ তাকে আশান্বিতও করেছে। সাউথ আমেরিকার একটি দেশ পুয়ের্তোরিকোর এ কবি আবার দুঃখ করে এও বলেন, শুক্রবার রাতে মেলা চত্বরে তিনি যত মানুষ দেখেছেন, তার ৮০ ভাগেরও বেশি মানুষকে দেখেছেন শূন্য হাতে, বই ছাড়া। এ বিষয়টি তাকে বেশ পীড়া দিয়েছে বলেও তিনি জানান। ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে কেন (?) বিষয়টি তিনি জানেন উল্লেখ করে বলেন, এ কারণেই হয়তো বইকে ঘিরে এত উচ্ছ্বাস ও এত আবেগের বহিঃপ্রকাশ আপনাদের (বাঙালীদের)।

মারিয়া লোপেজ বলেন, রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলি ও আরো কিছু সাহিত্য তিনি পড়েছেন। তাই রবীন্দ্রনাথকে ভালবেসে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন।এ দেশের প্রকৃতি ও আতিথেয়তা তাকে বেশ মুগ্ধ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে এরচেয়েও বেশি তাকে মুগ্ধ করেছে নারীর নেতৃত্বে এ দেশের উন্নয়নের কথা জেনে। বাংলাদেশের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক উন্নয়নসহ নারীর ক্ষমতায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় অবস্থানেরও তিনি ভূয়সী প্রশংসা করেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাবা এবং বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কতটুকু জানেন, এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খুব বেশি কিছু জানিনা। তবে তাঁর ৭ মার্চের ভাষণের কথা শুনেছি এবং তাঁর ডাকে এদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে, এটাও জেনেছি।

আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন প্রসঙ্গে কবি লোপেজ বলেন, এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে তিনি বাংলার সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল ইসলামসহ অনেক খ্যাতিমান কবি সাহিত্যিকদের সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এছাড়া সম্মেলনে অংশ নেয়া অন্যন্য দেশের কবি-সাহিত্যিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় সেসব দেশের সাহিত্য, সংস্কৃতি ও বিশ্বসাহিত্য সম্পর্কে জেনেছেন এবং নিজেকে সমৃদ্ধ করেছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *