এ যেন একই নাটক দ্বিতীয়বার মঞ্চস্থ। নাটকের মঞ্চ পাকিস্তান সুপার লীগের (পিএসএল) প্রথম কোয়ালিফাইং ম্যাচ। টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে এই পর্যায়ে কোয়েটা গ্লাডিয়েটর্সের কাছে মাত্র এক রানে হারে পেশোয়ার জালমি। ফাইনালে উঠে যায় কোয়েটা। এবারও ঠিক একই পর্যায়ে একই নাটক হলো। সেই কোয়েটার কাছে এবারও অবিশ্বাস্যভাবে মাত্র এক রানে হারলো পেশোয়ার। শুধু মঞ্চের প্লাটফর্ম আলাদা। গতবার এমন ঘটনা ঘটেছিল দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। আর এবার হলো শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এবারও জমজমাট নাটকীয় ম্যাচটি জিতে ফাইনালে উঠে গেলো সরফরাজ আহমেদের কোয়েটা। ৫ মার্চ শিরোপার লড়াইয়ে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে তারা। অন্যদিকে এখনো ফাইনালের আশা শেষ হয়নি পেশোয়ার জালমির। আজ দ্বিতীয় কোয়ালিফাইং ম্যাচে মুখোমুখি হবে ইসলামাবাদ ইউনাইটেড ও করাচি কিংস। এই ম্যাচের জয়ী দলের সঙ্গে শুক্রবার শেষ কোয়ালিফাইং ম্যাচে খেলবে তারা। সেখানে জিতে ফাইনালে ফের কোয়েটার মুখোমুখি হতে পারে তারা। গতবারের প্রথম কোয়ালিফাইংয়ে ১৩৩ রানে অলআউট হয় কোয়েটা। জবাবে ৯ উইকেটে ১৩২ রানে থামে পেশোয়ার। আর এবার টস হেরে আগে ব্যাটে গিয়ে কোয়েটা সংগ্রহ করে ৭ উইকেটে ২০০ রান। জবাবে ৯ উইকেটে ১৯৯ রান তুলতে পারে ড্যারেন স্যামি-শহিদ আফ্রিদিদের পেশোয়ার। পেশোয়ারের এই হার অবিশ্বাস্য। কোয়েটার জয়ের নায়ক বাঁ-হাতি স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজ। বড় এ টার্গেট সামনে নিয়ে ১৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রান তুলে ফেলে পেশোয়ার। শেষ ওভারে ৪ উইকেট হাতে দিয়ে দরকার ছিল মাত্র ৭ রানের। কিন্তু শেষ মুহূর্তে লেজেগোবরে অবস্থা করে ফেলে পেশোয়ার। নওয়াজের করা ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে রান নিতে পারেননি পেশোয়ারের অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। দ্বিতীয় বলে হাঁকান চার। জয়ের জন্য তখন শেষ চার বলে দরকার ৩ রান। কিন্তু এই সহজ কাজটি তারা করতে পারলো না। তৃতীয় বলে স্যামি আরো এক রান নেন। এতে শেষ তিন বলে দরকার হয় ২ রান। কিন্তু সেটাও সম্ভব হলো না। বরং শেষ তিন বলে পেশোয়ার হারলো তিন উইকেট। ওভারের চতুর্থ বলে নতুন ব্যাটে নামা ক্রিস জর্ডানকে ফেরান নওয়াজ। পরের বলে রানআউট হন ওয়াহাব রিয়াজ। শেষ বলেও একই পরিণতি ভোগ করেন হাসান আলী। এতে অবিশ্বাস্য এক হার নিয়ে আঙ্গুল কামড়াতে কামড়াতে মাঠ ছাড়েন পেশোয়ারের ব্যাটসম্যানরা। আর নাটকীয় ম্যাচে জয় তুলে ফাইনালে উঠে উল্লাসে ফেটে পড়ে কোয়েটা শিবির।
এদিন বড় টার্গেট সামনে নিয়ে শুরুতে ৩ রানে ২ উইকটে হারায় পেশোয়ার। কামরান আকমল ও মারলন স্যামুয়েলস এ রান করে ফেরেন। তবে তৃতীয় উইকেটে ১২ ওভারে ১৩৯ রান যোগ করেন মোহাম্মদ হাফিজ ও ডেভিড মালান। ৬ ছক্কা ও ৫ চারে মাত্র ৪৭ বলে ৭৭ রনে ফেরেন হাফিৎ। আর ১ ছক্কা ও ৮ চারে ৩০ বলে ৫৬ রানে ফেরেন মালান। আর পাঁচ নম্বরে নেমে শহিদ আফ্রিদি ৪ ছক্কা ও ১ চারে মাত্র ১৩ বলে ৩৪ রান করেন। মূলত তারা পেশোয়ারকে জয়ের পথে রেখে আসেন। কিন্তু লেজের ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যর্থতায় তীরে গিয়ে তরি ডোবায় তারা। এর আগে কোয়েটার হয়ে আহমেদ শেহজাদ ৩৮ বলে ৭১ ও কেভিন পিটারসেন ২২ বলে করেন ৪০ রান।