ফিলিপাইনের একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা ৩০০ মানুষ হত্যার দায় নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এদের মধ্যে ২০০ জনকে তিনি মেরেছেন পুলিশের একটি কুখ্যাত ‘ডেথ স্কোয়াডে’র অংশ হিসেবে। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রড্রিগো দুতের্তে যখন দাভাও শহরের মেয়র ছিলেন, তখন তারই নির্দেশে পুলিশের ওই ডেথ স্কোয়াড তৈরি করা হয়। আর্তুরো লাসকানাস নামে ওই অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যের অভিযোগ, এই ২০০টি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট দুতের্তে জড়িত। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার জাতীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সিনেটের একটি তদন্তের শুনানি চলাকালে ওই অভিযোগ আনেন লাসকানাস। তিনি বলেন, অক্টোবরে অনুষ্ঠিত আরেকটি সিনেট শুনানিতে তিনি মিথ্যা বলেছিলেন। ওই শুনানিও ছিল দুতের্তে-সংশ্লিষ্ট বিচারবহির্ভূত হত্যার তদন্ত নিয়ে। নিজের বক্তব্যে লাসকানাস বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে ৩০০ জন মানুষকে মেরেছেন। এদের মধ্যে ২০০ জনকে মেরেছেন দাভাও ডেথ স্কোয়াডের সদস্য হিসেবে। সর্বশেষ তিনি মানুষ খুন করেছেন ২০১৫ সালে। তিনি অন্তত দু’টি ঘটনার কথা বিস্তারিত উল্লেখ করেন। লাসকানাস বর্ণনা করেন কীভাবে তৎকালীন মেয়র দুতের্তের দেহরক্ষীর নির্দেশ মোতাবেক তিনি দুতের্তের দুই সমালোচককে খুন করেন। দুই সপ্তাহ আগে লাসকানাস প্রথম নিজের স্বীকারোক্তি এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। দাভাও শহরে কথিত গোপন পুলিশ ডেথ স্কোয়াডের সঙ্গে দুতের্তের যোগসূত্র নিয়ে সিনেটে এখন পর্যন্ত দু’জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এদের মধ্যে দ্বিতীয়জন হলেন লাসকানাস। সিনেটররা তাকে প্রশ্ন করেন, কেন তিনি পূর্বের শুনানিতে ডেথ স্কোয়াডের অস্তিত্বের কথা অস্বীকার করেছিলেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি আমার প্রিয় মানুষজনের জীবন নিয়ে শঙ্কিত ছিলাম।’ এছাড়া সাক্ষ্য পরিবর্তনের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, পূর্বের কর্ম নিয়ে তিনি অনুশোচনায় ভুগছিলেন। তবে প্রেসিডেন্টের মিত্ররা এই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন। তারা বলছেন, প্রেসিডেন্ট ও তার মাদকবিরোধী যুদ্ধকে কলঙ্কিত করতে বিরোধীরা এই ষড়যন্ত্র করছে। প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় আসার পর দুতের্তের মাদকবিরোধী যুদ্ধে এখন পর্যন্ত কয়েক মাসেই ৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, এ বিপুল হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে দুতের্তের আমলে দাভাওয়ে সংঘটিত বিপুল হত্যাযজ্ঞের মিল রয়েছে।