২০ বছরের মধ্যে প্রথম অবরোধ পালিত হওয়ার পরপরই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে ব্রাজিলে। রিও ডি জেনিরো সিটি সেন্টারে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাঙচুর করা হয় দোকানপাট। বিবিসির খবরে বলা হয়, দিনের বেশিরভাগ সময় অবরোধ শান্তিপূর্ণই ছিল। জনসাধারণ অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে বের হননি। দেশজুড়ে স্কুল ও ব্যাংকগুলো ছিল বন্ধ। প্রস্তাবিত পেনসন সংস্কারের প্রতিবাদে অবরোধের ডাক দিয়েছিল ট্রেড ইউনিয়নগুলো। প্রেসিডেন্ট মিচেল তেমের রিওতে হওয়া সহিংস ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি জোরালো প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, দেশকে আধুনিক করতে তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন। তিনি বলেন, দেশকে ইতিহাসের সব থেকে বাজে অর্থনৈতিক মন্দা থেকে বের করে নিয়ে আসতে ব্রাজিলিয়ান শ্রমিকরা ও সরকার একসঙ্গে কাজ করছে। ট্রেড ইউনিয়নের ভাষ্য, পরিবর্তিত ব্যবস্থার ব্যয় বহন করতে হবে ব্রাজিলের দরিদ্রতম ব্যক্তিদের। প্রস্তাবিত পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে, অবসর নেয়ার বয়স বৃদ্ধি ও কিছু সুবিধা কমানো। সরকারের যুক্তি হলো, এ পদক্ষেপগুলো পেনসন ব্যবস্থা ভেঙে পড়া ঠেকাতে প্রয়োজন।
অবরোধের প্রভাব পুরো ব্রাজিলজুড়ে পড়েছে। অনেক মানুষ ঘর থেকে বের হননি। অন্যরা শুধু সকালে কাজ করেছেন। সাও পাওলো, রিও ও অন্য শহরগুলোয় অনেক রাস্তাঘাট বন্ধ ছিল।
সন্ধ্যায় বিরোধী প্রতিবাদকারীরা সভা, সমাবেশে অংশ নিয়ে প্রেসিডেন্ট তেমেরের পেনসন সংস্কারের বিরুদ্ধে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেন। রিওতে কিছু প্রতিবাদ কর্মসূচি সহিংস রূপ নেয়। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়ে প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে। প্রতিবাদকারীরা পাল্টা পাথর ছোড়ে। ব্রাজিলের ও গ্লোবো সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী ৮টি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ব্রাজিলের সর্ববৃহৎ শহর সাও পাওলোতে হাজারো প্রতিবাদকারী মি. তেমেরের ব্যক্তিগত বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা করে। পুলিশ টিয়ারগ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সরকার বলছে, এ অবরোধে সংস্কারের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। উল্লেখ্য, এ সপ্তাহের শুরুতে প্রেসিডেন্ট তেমের তার শ্রম সংস্কারের সমর্থনে স্পষ্ট ব্যবধানে সংসদীয় ভোটে জেতেন।
গত বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট দিলমা রুসেফকে কংগ্রেস অভিসংশিত করার পর দায়িত্ব নেন মিচেল তেমের। সেপ্টেম্বরে শপথ নেন তিনি। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ রয়েছে তেমেরের।