যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বরখাস্ত করা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল মাইকেল ফ্লিনকে নিজেদের মতো তৈরি করে নিয়েছিল রাশিয়া। তাদের বিশ্বাস ছিল মাইকেল ফ্লিনকে ব্যবহার করতে পারবে তারা। তার মাধ্যমেই প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার টিমকে প্রভাবিত করতে পারবে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণাকালে যেসব কথোপকথন হয়েছে সেখানে এসব কথা দম্ভ করে বলেছেন রাশিয়ান কর্মকর্তারা। বিভিন্ন সূত্র এসব কথা বলেছে সিএনএন’কে। অনলাইন সিএনএনে এ কথা লিখেছেন সাংবাদিক গ্লোরিয়া বর্গার, পামেলা ব্রাউন, জিম সুইটো, মারশান কোহেন ও এরিক লিচতব্লাউ। এ তথ্য প্রকাশ হওয়ার পর তুমুল বিতর্ক জমে উঠেছে। বলা হচ্ছে, তাহলে কি মাইকেল ফ্লিন রাশিয়ার হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছিলেন। এ প্রশ্নের উত্তর কেউ নিশ্চিত করে দিতে পারছেন না। তবে রাশিয়ার কর্মকর্তাদের ওইসব কথোপকথন নিয়ে গভীর উদ্বেগে আছেন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, যারা মাইকেল ফ্লিনকে স্পর্শকাতর গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার করেছিলেন। বর্তমান ও সাবেক সরকারের মুখপাত্র এমন সব সংশয় তুলে ধরেছেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, বিষয়টি শুরু থেকেই ছিল ‘এ ফাইভ-এলার্ম ফায়ার’। তিনি (ফ্লিন) রাশিয়ানদের সঙ্গে যেভাবে কথা বলেছেন তা এক ‘ফাইভ-এলার্ম ফায়ার’। আরেকজন সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেছেন, ফ্লিনকে দেখা যেতে পারে জাতীয় নিরাপত্তার একটি বড় সমস্যা হিসেবে। রাশিয়ান কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাইকেল ফ্লিনের কথোপকথন এটাই ইঙ্গিত করে যে, তিনি ছিলেন রাশিয়ার একজন ঘনিষ্ঠ মিত্র। ডিসেম্বরে তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলায়েকের সঙ্গে ওয়াশিংটনে গোপন আলোচনা করেন। সেই বিষয়টি ধরা পড়ে। এ নিয়ে অনেক পানি ঘোলা হওয়ার পর মাইকেল ফ্লিন এ নিয়ে প্রশাসনের কাছে মিথ্যা বলেন। তার সূত্র ধরেই প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প প্রথম তার শীর্ষ স্থানীয় একজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেন। তিনি হলেন তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন। কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়, এসব কথোপকথনের মাধ্যমে ট্রাম্প টিমের সঙ্গে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে থাকতে পারে রাশিয়া। তাকে কেন্দ্র করেই ট্রাম্প টিম ও রাশিয়া কানেকশনের মধ্যে সম্ভাব্য সমঝোতা থাকার বিষয়টি সামনে চলে আসে। জোর দাবি ওঠে তদন্তের। গঠিত হয় একাধিক কমিটি। তার মধ্যে এফবিআই নিজেরাই একটি তদন্ত করতে থাকে। তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন এফবিআইয়ের পরিচালক জেমস কমি। কিন্তু কয়েকদিন আগে তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।