রাশিয়ান ইমেইল স্ক্যান্ডাল নিয়ে হোয়াইট হাউজে ‘ক্যাটেগরি ৫ হারিকেন’ চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ, ট্রাম্পপুত্র ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের রাশিয়ান আইনজীবীর সঙ্গে বৈঠক, এ সংক্রান্ত ইমেইলের তথ্য ফাঁস হওয়ার পরে হোয়াইট হাউজের ভিতরকার অবস্থা বোঝাতে ‘ক্যাটেগরি ৫ হারিকেন’ শব্দ কয়েকটি ব্যবহার করেছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। ক্লার্ক মিনডোকের লেখা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউজের স্টাফরা একে অন্যকে দূষছেন। এতে সহযোগীরা নিজেদের অসহায় বোধ করছেন। ক্লার্ক মিনডোক আরো লিখেছেন, ইউএস ক্যাপিটলের হলগুলোতে অনেক রিপাবলিকানই নীরবতা অবলম্বন করছেন। তাদেরকে যখন ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র প্রকাশিত ইমেইলের বিষয়ে জানেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হচ্ছে তখনই তারা ঠা-া স্বভাব প্রদর্শন করছেন। একই অবস্থা হোয়াইট হাউজেরও। তারা প্রকাশ্যে এ বিষয়ে কথা বলছেন না। তবে ইমেইল প্রকাশিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরে তারা বলেছেন, ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র কোনো অন্যায় করেন নি। তিনি স্বচ্ছতা প্রদর্শন করছেন। তিনি উচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন একজন ব্যক্তি।
কিন্তু হোয়াইট হাউজের ওয়েস্ট উইংয়ে ভিন্ন চিত্র মিলছে। এসব চিত্রের কথা জানাচ্ছেন হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, তারা নিজেদেরকে এক্ষেত্রে অন্ধকারে মনে করছেন। ইমেইল প্রকাশ হয়ে পড়ায় যেন বড় রকমের এক ঝড় বয়ে যাচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের একজন উপদেষ্টা পলিটিকো’কে বলেছেন, ইমেইল প্রকাশ করায় তিনি এখন অসহায় বোধ করছেন। কারণ, এতে সৃষ্টি হয়েছে বিশৃংখলা। একই ব্যক্তি এবং হোয়াইট হাউজের আরো কয়েকজন ব্যক্তি বলেছেন, কোনো বৈঠকের কথা তাদের জানা নেই। এমনকি ওই বৈঠকে ট্রাম্পের জামাই ও শীর্ষ উপদেষ্টা জারেড কুশনার ছিলেন এ বিষয়েও তারা কথা বলছেন না।
জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে জার্মানি থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রকাশ্যে আসেন নি। তার সঙ্গে গত কয়েকদিনে যারা কথা বলেছেন তারা বলছেন, তিনি অগ্নিশর্মা হয়ে আছেন। মাঝে মাঝেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মিডিয়াকে দায়ী কনে। তবে এবার তিনি যে ক্ষুব্ধ তা তার ছেলের ওপর নয়। তিনি সিনিয়র স্টাফদের কাছ থেকে যেসব পরামর্শ পেয়েছেন তার যোগ্যতা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। অন্য এক রিপোর্টে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে, দোষ একে অন্যের ওপর চাপাচ্ছেন স্টাফরা। প্রেসিডেন্টের ক্ষোভ থেকে রক্ষা পেতে তারা সহকর্মীদের দিকে আঙ্গুল তুলছেন। এমন অবস্থার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবার টুইটারে মিডিয়াকে ঘায়েল করেছেন। তিনি অনুসারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, মিডিয়ায় অজ্ঞাত উৎস থেকে যেসব রিপোর্ট প্রকাশ হচ্ছে তা বিশ্বাস না করতে। তিনি বলেছেন, হোয়াইট হাউজ কার্যকরভাবে চলছে। তারা বিভিন্ন পলিসির দিকে মনোযোগ দিয়েছেন। তবে তার ছেলে ট্রাম্প জুনিয়রের সঙ্গে সখ্য আছে বাইরের এমন মিত্ররা বলছে, ট্রাম্প জুনিয়র হয়তো বিচারের মুখোমুখি হবেন না। তবে তার ইমেইল কাহিনী হোয়াইট হাউজের ভাবমূর্তির ক্ষতি করবে। এ অবস্থাকে তার এক মিত্র ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, ওয়েস্ট উইংয়ের কাছে এটা হলো ক্যাটেগরি ৫ হারিকেন।