ঢাকার রাস্তায় দিনে ৩৬৫টি নতুন গাড়ি নামছে। বিআরটিএ-এর হিসাবে এটি হলেও বাস্তবে এ সংখ্যা আরো বেশি। সড়ক ব্যবস্থাপনা ছাড়া এই বিপুল সংখ্যক গাড়ির চাপ নিতে না পারায় রাজধানীতে দিনে দিনে বাড়ছে যানজট। হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে ঢাকার মোটরচালিত যানবাহনের সংখ্যা ১১ লাখ ১৪ হাজর ১৯১টি। চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত বিআরটিএতে নিবন্ধনের তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন ঢাকায় নতুন গাড়ি নামছে প্রায় ৩৬৫টি । নম্বর প্লেটে বিভিন্ন পেশা, সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের নাম লিখে নিবন্ধন ছাড়াই বছরের পর বছর চলছে বহু গাড়ি। আবার একই নম্বরে একাধিক গাড়ির সংখ্যাও রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ব্যক্তিগত গাড়ি নামছে। এর ফলে ভোর সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানীর প্রতিটি অলি-গলিতেও অসহনীয় যানজট লেগে থাকছে। বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিচার্জ ইনস্টিটিউটের সহকারি অধ্যাপক কাজী মো. সাইফুন নেওয়াজ মানবজমিনকে বলেন, ব্যক্তিগত গাড়িতে প্রতি ১০ স্কয়ার ফুট জায়গাতে মাত্র ২ জন লোক চড়তে পারে। অন্যদিকে গণপরিবহনে একই পরিমাণ জায়গায় বসে ও দাঁড়িয়ে ১৫/১৬ জন যাত্রী চলাচল করতে পারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে ব্যক্তিগত গাড়ি। কিন্তু সেই হারে গণপরিবহন বাড়ছে না। অন্যদিকে ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় চলাচল করার সময় যেমন যানজট তৈরি করে। তেমনি থেমে থাকার সময়ও রাস্তাঘাটে ও মার্কেটের সামনে পার্কিং করেও যানজট তৈরি করে। যত্রতত্র পার্কিং না করার বিষয়ে যদি সরকারিভাবে কঠোরতা আরোপ করা হয়, একই সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার বিষয়েও শর্ত কঠিন করা হয় তাহলে এই সমস্যা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
বিআরটিএর তথ্য অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ঢাকায় নতুন বাস নেমেছে ১৭০৪ টি। মিনিবাস নেমেছে মাত্র ৫৯ টি। যাত্রীবাহী প্রাইভেটকার নেমেছে ৯২৩৬ টি। বাস, মিনিবাস ও যাত্রীবাহী প্রাইভেট কার মিলে নেমেছে এ বছর গাড়ি নেমেছে ১০ হাজার ৯৯৯ টি।
অন্যদিকে জিপগাড়ী নেমেছে ১৯৯৮ টি। মাইক্রোবাস ২১৮৬ টি। মোটরসাইকেল ২৬৮৯৩ টি। বিশেষ বিষয়ের গাড়ি ১০৫টি। ও ট্যাক্সি ক্যাব নেমেছে ৩ টি। জিপ, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, বিশেষ গাড়ি ও ট্যাক্সি ক্যাব মিলে চলতি বছর নতুন গাড়ি নেমেছে ৩১১৮৫ টি। এছাড়া অন্যান্য গাড়ি মিলে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত সর্বমোট গাড়ি নেমেছে ৫৪ হাজার ৭৮৮ টি নতুন গাড়ি।
এ ব্যাপারে বিআরটিএ’র সচিব মো. শওকত আলী বলেন, আমরা শুধু রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কিত কাজগুলো করি। সরকার বিআরটিএ’র হাতে গাড়ি কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেয়নি। বিআরটিএ’র আইনে বলা আছে প্রতিষ্ঠানটি শুধু গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দিবে। গাড়ির ফিটনেস দিবে। গাড়ির রুট পারমিট দিবে। রুট পারমিট নবায়ন করবে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করবে ও নবায়ন করবে। এর বাইরে কোনো কাজ করার ক্ষমতা দেয়া নেই। তিনি বলেন, গাড়ি আমদানি ও কেনাবেচার সঙ্গে সরকারের কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও সংস্থা জড়িত।