জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় স্থায়ী জামিন পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এ মামলায় প্রায় নয় বছর আগে হাইকোর্টের দেয়া রুলের শুনানি শেষে গতকাল তাকে স্থায়ী জামিন দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. জাকির হোসেন ভূইয়া। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। খালেদার আইনজীবী জাকির হোসেন ভূইয়া সাংবাদিকদের বলেন, এর আগের রুল যথাযথ ঘোষণা করে হাইকোর্ট তার স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেছেন। এতে তার জামিন বহাল আছে। এতিমদের জন্য বিদেশ থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩রা জুলাই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলা দায়ের করে দুদক। খালেদার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ২৬শে আগস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়ে রুল জারি করে। খালেদা জিয়াকে কেন স্থায়ী জামিন দেয়া হবে না তার কারণ জানতে চাওয়া হয় রুলে। সরকার ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলেও হাইকোর্টের দেয়া জামিন সে সময় বহাল থাকে। তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৫ই আগস্ট এ মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তার বড় ছেলে বিএনপি নেতা তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয় দুদক। ২০১৪ সালের ১৯শে মার্চ অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলাটি ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। রাজধানীর বকশীবাজারের কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলছে। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের পর্যায়ে রয়েছে। লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন দুদকের আইনজীবীরা। অন্যদিকে ন্যায়বিচার না পাওয়ার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে খালেদা জিয়া এ মামলায় চতুর্থবারের মতো বিচারক বদলের আবেদন করেছেন, যা হাইকোর্টে শুনানির পর্যায়ে রয়েছে।