ভারত-ভুটান ও চীনের সংযোগস্থল দোকলাম মালভূমির নিকটে অবস্থিত এক গ্রামের বাসিন্দাদের গ্রামত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। দোকলাম নিয়ে প্রায় দুইমাস ধরে চীন ও ভারতের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির। অঞ্চলটিতে মুখোমুখি অবস্থায় রয়েছে ভারত ও চীনের সৈন্যরা। এমন অবস্থায় গ্রামবাসীদের গ্রামত্যাগের নির্দেশ দেয়ার তাৎপর্য অনেক। এ খবর দিয়েছে জি নিউজ ও নিউজ১৮। সূত্রের বরাত দিয়ে নিউজ১৮-র খবরে বলা হয়, দোকলামের পার্শ্ববর্তী নাথাং গ্রামের কয়েক শ’ মানুষকে গ্রামত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। তবে ওই গ্রাম ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৩৩ কর্পের হাজার হাজার সৈন্যের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করার জন্যে এ নির্দেশ দেয়া হয়েছে, নাকি দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটলে তাতে যেন বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনা এড়াতে দেয়া হয়েছে, এ বিষয়ে সপষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। দোকলাম নিয়ে বেশ কয়েকবার ভারতকে হুমকি দিয়েছে চীন। আর এমতাবস্থায় ভারতের এমন পদক্ষেপের তাৎপর্য ব্যাপক। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে নিউজ১৮-র খবরে বলা হয়েছে, গ্রামের দিকে সৈন্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে। যদিও ভারতীয় সেনাবাহিনী এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি তবে কিছু জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এটি একটি বার্ষিক অনুশীলনের অংশ। যেটা প্রতি বছরে সেপ্টেম্বরে করা হয়ে থাকে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বরাতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি একটি সাধারণ রক্ষণাবেক্ষণ সমপর্কিত পদক্ষেপ। এছাড়া প্রতিবেদনগুলোতে সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, অঞ্চলটিতে সামরিক বাহিনী ‘নো ওয়ার, নো পিস’ অবস্থায় আছে।
এদিকে জি নিউজের খবর অনুসারে, ৯ই আগস্ট চীনের রাষ্ট্র-পরিচালিত পত্রিকায় এক সমপাদকীয়তে ভারতকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, যুদ্ধের জন্য সময় গোনা শুরু হয়ে গেছে। ভারতের উচিত হুঁশে ফিরে আসা ও ডকলাম থেকে সৈন্য সরিয়ে নেয়া। এছাড়া গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, অঞ্চলটিতে আরো সৈন্য মোতায়েন করেছে চীন। চীনের পত্রিকা গ্লোবাল টাইমসের এক নতুন সমপাদকীয়তে বলা হয়েছে, ভারতের উচিত সময় থাকতে হুঁশে ফিরে আসা। সমপাদকীয়টিতে আরো বলা হয়, এ অবস্থার একটি শান্তিময় সমাধানের পথ ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও, চীনের বার্তা সংস্থা জিনহুয়া ও অন্যান্য গণমাধ্যমে এই অবস্থা নিয়ে প্রকাশ হয়েছে আরো বেশ কয়েকটি লেখা। উল্লেখ্য, দোকলামে চীন ও ভারতের সৈন্য প্রায় সাত সপ্তাহ ধরে মুখোমুখি অবস্থায় রয়েছে। দু’পক্ষের মধ্যে এ অবস্থার সৃষ্টি হয় জুন মাসের মাঝের দিকে। ওই সময়, অঞ্চলটিতে একটি রাস্তা তৈরিতে চীনা সৈন্যদের বাধা দেয় ভারতীয় সৈন্যরা। ভারত আশঙ্কা করছে, অঞ্চলটিতে রাস্তা তৈরি করলে, ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত রাজ্যগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে পারে চীন। তবে চীনের দাবি, চীন তাদের ভূ-খণ্ডের মধ্যেই রাস্তা তৈরি করছিল।