মামুনুর রশীদ রাজ,স্বদেশ নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম : পান্থপথে হোটেল ‘ওলিও ইন্টারন্যাশনাল’ হোটেলের চারতলায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় অভিযান শেষ হয়েছে। সেখানে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে সাইফুল ইসলাম (২১) নামে এক জঙ্গি নিহত হয়েছেন।নিহত ওই জঙ্গির বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায়। আত্মঘাতী ওই জঙ্গি খুলনার বিএল কলেজের শিক্ষার্থী ছিল। তার বাবা ছিলেন এক মসজিদের ইমাম।
এর আগে সোমবার মধ্যরাত থেকে পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের পাশের ওলিও নামের হোটেলটি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে সকালে ওই আস্তানায় অভিযান চালানো হয়। অভিযান চলাকালীন মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে হঠাৎ ওই আস্তানায় বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে হোটেলটির একাংশের দেয়াল ভেঙে পড়েছে। এ সময় একজন আহত হয়েছে। তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কলাবাগান থানার এস আই সারোয়ার হোসেন জানান, মঙ্গলবার ভোরে স্কয়ার হাসপাতালের কাছে হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনাল নামের ওই হোটেলটি ঘিরে ফেলে।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, হোটেলের যে কক্ষে বিস্ফোরণ ঘটেছে, আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী এক যুবক সোমবার রাতে সেটি ভাড়া নেন।সে নব্য জেএমবির সদস্য; আগে শিবির করত। তার বাবা আবুল খায়ের মোল্লাও একটি মসজিদের ইমাম ও খুলনার জামাত নেতা।
হোটেল ওলিওর পুরনো ভবনে আত্মঘাতী হওয়া জঙ্গির ১৫ আগস্টে ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিতে আসা মানুষের মিছিলে হামলার পরিকল্পনা ছিল। জানালেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি আরো বলেন, আমাদের গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতায় তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়। ওলিও হোটেলের একটি কক্ষে সে ছিল। ভেতরে সে সুইসাইডাল ভেস্ট পরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ করেছে। এতে ভবনের দেয়াল ও বারান্দার অংশ ধসে পরেছে।তিনি আরো জানান, নিহত ওই যুবক নব্য জেএমবির সদস্য। আত্মসমর্পণের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে সে সুইসাইড ভেস্টে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে।
এ কে এম শহীদুল হক বলেন, নিহত যুবক নব্য জেএমবির সদস্য। গোয়েন্দা তৎপরতা চালানোর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার তথ্য পায়। তাকে সারেন্ডার করতে বলা হয়েছিল, কিন্তু সে করেনি।
এর আগে সোমবার মধ্যরাত থেকে পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের পাশের ওলিও নামের হোটেলটি ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ সদস্যরা ওই এলাকার প্রতিটি গলি এবং বিভিন্ন ভবনের ছাদে অবস্থান নেন, সোয়াট সদস্যরা অভিযানের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। অভিযানের নাম দেয়া হয় ‘অপারেশন অগাস্ট বাইট’।পুলিশ কয়েক ঘণ্টা ঘিরে রাখার পর সকাল পৌনে ১০টার দিকে চারতলা হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনাল থেকে বিকট বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ পাওয়া যায়। বিস্ফোরণে হোটেলের চতুর্থ তলার রাস্তার দিকের অংশের দেয়াল ধসে নিচে পড়ে।
এদিকে সকালে পুলিশ হোটেলটি ঘিরে ফেলার পরপরই রাসেল স্কয়ার থেকে পান্থপথ-গ্রিন রোড পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। আশপাশের প্রতিটি গলিতে অবস্থান নেন পুলিশ ও সোয়াট সদস্যরা।
বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।পুলিশের বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা জঙ্গি আস্তানায় প্রবেশ করেছেন।