স্বদেশনিউজ২৪ , হামিম রাফিঃ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গারা সেনাবাহিনীদের হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফের আশেপাশের এলাকায় আশ্রয় নিচ্ছেন। এসময় সন্তানসহ বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে বহন করে অনেককেই বাংলাদেশে আসতে দেখা গেছে। রোহিঙ্গা নারী হানিদা বেগমও জীবন বাঁচাতে তার ছোট্ট দুধের সন্তান আবদুল মাসুদকে নিয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতবার নদী পার হয়ে বাংলাদেশে আসেন। কিন্তু পথেই ওই ছোট্ট শিশুটির নিঃশ্বাস চিরদিনের জন্য ফুরিয়ে যায়।
একমাস বয়স হয়েছিল আবদুল মাসুদের। মাসুদের মা কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তার কোলের সন্তান মাসুদ আর নেই। সন্তানকে হারিয়ে মায়ের মাতম থামছেই না। শিশুটির দেহ বুকে জড়িয়ে ধরে রেখেছে মা হানিদা। হানিদা বার বার বলছেন তার সন্তান এখনই জেগে উঠবে।
বার্তা সংস্থা এপি’র চিত্র সাংবাদিক তার ক্যামেরায় এ করুণদৃশ্য ধারণ করেছেন।
হানিদা তা বিশ্বাস করতেই পারছেন না তার শিশুসন্তান আর নেই। এমন দৃশ্য দেখে উপস্থিত বাকিরাও চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি।
মিয়ানমার থেকে ছোট নৌকায় করে ওই রোহিঙ্গা নারী তার দুই সন্তানকে নিয়ে পারাপারের সময় নৌকাটি ডুবে গেলে আবদুল মাসুদের মৃত্যু হয়। তবে হানিদার আরেক সন্তান বেঁচে আছে।
কিন্তু সন্তানের এভাবে মৃত্যু হানিদা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। সে তার সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করছেন। আর কাঁদছেন। এ দৃশ্য দেখে আশেপাশের মানুষও তাদের চোখের জল ধরে রাখতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইনে গত ২৪ অগাস্ট রাতে একযোগে ৩০ টির মতো পুলিশ ফাঁড়ি এবং একটি সেনা ক্যাম্পে হামলার জের ধরে সহিসংতার শুরু। এরপর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হামলায় প্রায় তিন হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি। কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে।