আশরাফুল আলম ||ভৈরব-কুলিয়ারচর প্রতিনিধি|| কিশোরগঞ্জ ভৈরবের কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: ফারুক মিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কাজে অনিয়ম দুর্নীতির মিথ্যে অভিযোগ উঠেছে। ইউনিয়ন পরিষদের আট জন সদস্য চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এই মিথ্যে অভিযোগ তুলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে এ ব্যাপারে তারা লিখিতি আবেদন করে এসবের প্রতিকারও চেয়েছেন।
আবেদনপত্রে টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পের কাজে চেয়ারম্যান কর্তৃক নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে উল্লেখ্য করে এর অনুলিপি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপনের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগ পত্রে সদস্যরা উল্লেখ করেন, কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প টিআর, কাবিখা, কাবিটার কাজ কখন আসছে, কখন কোথায় হচ্ছে কিছুই জানেন না তারা। ট্রেড লাইসেন্স, বসত বাড়ির কর, ইটভাটার কর, খেয়া ঘাটের করসহ অন্যান্য খাতের আয়-ব্যয়ের হিসাবও ইউপি সদস্যদের অবগত করছেন না চেয়ারম্যান।
কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো: লতিফ মিয়া জানান, চেয়ারম্যান ফারুক একাধিকবার তার স্বাক্ষর জাল করে টিআর, কাবিটার টাকা ও চাল উত্তোলন করেছেন। এসবের কিছুই তাকে অবগত করেননি। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান নির্ধারিত সময়ে মাসিক সভা না করে ভুয়া সভা দেখিয়ে স্বাক্ষর জাল করে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের অনুমোদন করিয়ে নিচ্ছেন। এতে সহায়তা করছেন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব। এছাড়াও চেয়ারম্যান ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের স্থায়ী কমিটির ওয়ার্ড ভিত্তিক সভাও করেননি বলে অভিযোগ করেন। এর ফলে এলাকার স্বাভাবিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে প্যানেল চেয়ারম্যান বলেন।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: ফারুক মিয়া একটি সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সাথে বলেন তাঁর বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। চেয়ারম্যান বলেন, ইউপি সদস্যরা আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন এর সবই মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্যেশ্যমূলক। তারা নিজের স্বার্থ হাসিল করতে না পেরে এমন অভিযোগ তুলছেন।
তিনি বলেন ওয়ারিশ সার্টিফিকেট, ট্রেডলাইসেন্স ও জন্মনিবন্ধন একমাত্র চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরে হওয়ার কথা থাকলেও বে-আইনীভাবে ১নং ওয়ার্ডের ফুল মিয়া মেম্বার কালিকা প্রসাদ ইউনিয়নের প্রস্তাবিত বেসিক এর ৪০ একর জমির টাকা জমির মালিকেরা উওোলন করতে গেলে যে সমস্ত ওয়ারিশান কাগজপত্রাদি প্রয়োজন হয় সেগুলো সে নিজেই নিয়ম- বহির্ভুত স্বাক্ষর করে জমির মালিকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। উল্লেখ্যযোগ্য স্বাক্ষীদের নাম কবির খাঁন,মাজম খাঁন,সাগর খাঁন এর এই দূর্নীতিকে আমি বাঁধা দেওয়াই তার সাথে আমার মনমালিন্য হয়।সেজন্য সে আমার বিরুদ্ধে কথা বলে। ৭নং ওয়ার্ডের বাচ্চু মেম্বারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে যে সে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বিধবা কার্ড,ভিজিডি কার্ড এবং সেলাই মেশিনের কথা বলে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন।৪ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ছালাম মিয়া ঝগড়াচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বিনামূল্যে ১,৮৫,৫০০/= টাকার স্কুল ব্যাগ ও টিফিন বক্স দেওয়ার কথা থাকলেও কিছু টাকার জিনিসপত্র দিয়ে বাকি টাকা সে নিজেই আত্মসাৎ করেছে এবং কিছুদিন পূর্বে ঢাকা ওয়ারী এলাকায় আপত্তিকর কাজে ধরা পরলে তার বিরুদ্ধে ওয়ারী থানায় মামালা হয়। আমি এ বিষয়ে থাকে শাসন করি এবং দূর্নীতি কাজ করতে বারন করি বলে আমার প্রতি রাগান্বিত হয়ে আমার উল্টা হয়ে গেছে। ৫ নং ওয়ার্ডের লতিফ মেম্বার সে গ্রামের বিভিন্ন শালিস দরবারে সাধারণ জনগনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে শালিস দরবারে পক্ষ -পক্ষিত্ব করে, এ নিয়ে তার সাথে আমার কথা কাটাকাটি হলে আমাকে সে বলে টাকা খরচ করে মেম্বার হয়েছি সৎ থাকলে কি আর টাকা উপার্জন করতে পারবো? এরপর থেকে সে প্রায়ই আমাকে নিয়ে মানুষের নিকট মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন কথা বলে সাধারণ জনগনের কাছে বদনাম বলে বেড়াত। আমি তার প্রতিবাদ করতে গেলে সে আমার সাথে অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করতো এবং আমাকে সমাজের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য পরিকল্পনা করতে লাগলো। আমি যখন জানতে পারি সে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অপবাদ দেওয়ার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে নালিশ করছে, তখন আমি বিভিন্ন মারফতে এর প্রতিবাদ করলে, সে আমাকে দেখে নিবে বলে জানায় এবং আমার জনপ্রিয়তা ধূলিসাৎ করার পায়তারা করে এবং মানহানি করার জন্য বিভিন্ন মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন ঘটনা সাজিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করার অপচেষ্টা চালায়। কিন্তু আমি তার এই মিথ্যা কুটসায় প্রতিরোধ করার পূর্বেই ভৈরব উপজেলার অফিসার বরাবর আমার নামে একটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দরখাস্ত দাখিল করে। যাহা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মনগড়া।