মামুন কবিরাজ। রংপুরের পীরগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামে তার ব্যাপক পরিচিতি। অসচেতন মানুষদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে যাবতীয় রোগে তাবিজ-কবজ, জ্বীন-পরী, দেব-দাসীর আঁছরে ঝাড় ফুঁক দেয়াই তার কাজ। তবে এসব কাজের অন্তরালে যুবতী মেয়েদের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়াই যেন তার নেশা। গতকাল শুক্রবার রাতে পীরগঞ্জের চৈত্রকোল ইউনিয়নের নিধিরামপুর কানিপাড়া গ্রামে এক কলেজ পড়–য়া ছাত্রীর ঘরে আপত্তিকর অবস্থায় তাকে আটক করে উত্তম মধ্যম দেয় গ্রামবাসী। পরে ভন্ড কবিরাজ মামুন তার নানা অপকর্মের কথাও অকপটে স্বীকার করেছে। তবে এই ঘটনার পর অসহায় পরিবারের কলেজ ছাত্রীটি যাতে মুখ খুলতে না পারে সেজন্য তাকে কৌশলে প্রভাবশালী কবিরাজের লোকজন অপহরণ করে নিয়ে গেছে। গত দু’দিন ধরে ভন্ড কবিরাজ আটক থাকলেও অপহৃত কলেজ ছাত্রীটি উদ্ধার হয়নি। এ ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মেয়েটির পরিবার। এলাকাবাসী জানায়, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার বিনোদনগর ইউনিয়নের কলমদারপুর গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের পুত্র ও ৪ সন্তানের জনক কবিরাজ মামুন মিয়া (৪৮)। তার নাতি নাতনীও রয়েছে। কবিরাজী বিদ্যার সূত্র ধরে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মামুন মিয়া পীরগঞ্জের নিধিরামপুর কানিপাড়া গ্রামে আসে। গ্রামের লোকজন যখন ঘুমে বিভোর এমন সময় পূর্ব পরিচয়ের ভিত্তিতে শফিকুল ইসলামের কলেজ পড়–য়া কন্যা ছালমা খাতুনের ঘরে ঢোকে ওই কবিরাজ। এক পর্যায় এক প্রতিবেশী টের পেয়ে আশপাশের লোকজনকে বিষয়টি জানালে গভীর রাতে তাকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে গ্রামবাসী। খবর পেয়ে কবিরাজের লোকজন রাতেই ওই বাড়িতে আসে এবং ভোর বেলায় কৌশলে কলেজ ছাত্রী ছালমাকে তুলে নিয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রেজাউল ইসলাম মুঠোফোনে ছালমার পরিবারকে জানায়, কবিরাজকে ছেড়ে দিয়ে মেয়েকে নিয়ে যান। নইলে মেয়েকে পাবেন না। অন্যদিকে শনিবার সকালে চৈত্রকোল ইউপি চেয়ারম্যান জিয়ারউর রহমান সবুজ সংবাদ পেয়ে ভন্ড কবিরাজ মামুনকে উদ্ধার করে নিজ জিম্মায় নেয়। তিনি বলেন, আইনগত জটিলতা আছে তাই মেয়ে উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ভন্ড কবিরাজকে ছেড়ে দেয়া যাবে না। এই ব্যাপারে নির্যাতিত ও অপহৃত কলেজ ছাত্রীর মা তাইফুল বেগম ও তার চাচা শরিফুল ইসলাম আক্ষেপ করে বলেন, ‘বাহে! গরীবের বিচার নাই। বিষয়টি ওসি স্যারকেও মোবাইলে জানানো হয়েছে।’ পীরগঞ্জ থানার ওসি রেজাউল করিম জানান, মেয়েকে নিয়ে আসলে ভন্ড কবিরাজের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হবে। অপহরণের বিষয়টি অবগত নই। এ বিষয়ে মেয়ের পরিবারও কিছু জানায়নি।