রায়হান কবির,স্বদেশ নিউজ ২৪.কমঃ আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো দেশীয় চলচ্চিত্রের নতুন সংগঠন ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ফোরাম’। ঢাকা ক্লাবে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি।বুধবার দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠান শুরু হবার কথা থাকলেও দুপুর ১টায় আরম্ভ হয়।
শুরুতে খল-অভিনেতা আহমেদ শরীফ মাইক্রোফোন হাতে সঞ্চালনা করেন। তার আমন্ত্রণে জনপ্রিয় অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান কোরআন তেলাওয়াত করেন।এরপর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন প্রিয়দর্শিনী চিত্রনায়িকা মৌসুমী ও নুসরাত ফারিয়া। তারা দু’জন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেন। বক্তাদের বক্তব্যে চলতে থাকে অনুষ্ঠান।কিন্তু কোথায় যেন এক শূন্যতা। আর সেই শূন্যতা আর কারো জন্য নয়। দেশীয় চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়ক শাকিব খানের জন্য।উপস্থিত অনেকেই বলছিলেন শাকিব খান কি আসবেন না? বেলা দুইটার দিকে হঠাৎ অনুষ্ঠানে এসে উপস্থিত হলেন এই জনপ্রিয় নায়ক। মুহুর্তেই ক্যামেরার ফ্লাশের আলো বর্ষণ হতে দেখা গেলো তার দিকে।মৌসুমী বলেছিলেন, আমাদের সবার প্রিয় শাকিব খানের কাছ থেকেই প্রথম প্রস্তাব আসে চলচ্চিত্রের উন্নয়নের লক্ষ্যে নতুন একটি সংগঠনের।
তিনি শাকিব খানকে মঞ্চে ডাকেন কিছু বলার জন্য। নতুন এ সংগঠনের কার্যনির্বাহী সদস্যও তিনি।শাকিব বলেন, আমাদের পার্শ্ববতী দেশ ভারতের কলকাতার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির দিকে তাকালে দেখবো গত কয়েক বছরে তারা কতো উন্নয়ন করেছে। কিন্তু একসময় আমাদের একটা সিনেমার বাজেটে ওদের ৭টা সিনেমা হতো। তারা সবাই মিলে চেষ্টা করেছে ইন্ডাস্ট্রির ভালো সময় ফেরানোর। তারা ‘ইমপা’র মতো একটা সংগঠন করেছে। আমার প্রস্তাব ছিল তেমনই। যেখানে প্রযোজক-পরিচালক, শিল্পীসহ চলচ্চিত্রের শিল্পের সঙ্গে জড়িত সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের উন্নয়নে কাজ করে যেতে পারবো।’তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই এ দেশের চলচ্চিত্র শিল্প তৈরি হয়েছে। তিনি একটা দেশকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীন করেছেন। আমরা সবাই মিলে কেন পারবো না আমাদের এই চলচ্চিত্র শিল্প সামনে এগিয়ে নিতে।’ক্ষোভ নিয়ে শাকিব বলেন, আমার কষ্ট লাগে। এতো বছর চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে জড়িত। জীবনের বেশিরভাগ সময় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রেখেছি নিজেকে।
সব সময় ভেবেছি কীভাবে এর উন্নয়ন করা যায়। দুঃখ লাগে আজ কথায় কথায় সমিতি থেকে বহিষ্কার করা হয়। এতো বছর কাজ করার পরেও স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারবো না। এদিকে তাকালে বহিষ্কার, ওদিকে তাকালে বহিষ্কার। ঘাড় ঘোরালে বহিষ্কার। আরে তাহলে করবোটা কি?শাকিবের বক্তব্য শেষে মঞ্চে আসেন প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।তিনি বলেন, ‘শাকিব জনপ্রিয় নায়ক। বেশ ভালো বক্তব্যও দিতে পারেন। আগুন ঝরাতে পারেন কথায়। সে রাজনীতিতে এলে ভালো করবে। তাকে রাজনীতিতে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’তথ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘সবাই মিলে যে সংগঠন (চলচ্চিত্র ফোরাম) তুলেছেন তার যত্ন নেবেন। বিশৃঙ্খলা করবেন না। মিলেমিশে কাজ করবেন। এটাই চাই। চলচ্চিত্রের সোনালি ইতিহাস ছিল। সেটাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তার জন্য আপনাদের ভালো কাজ করতে হবে।’এদিকে পুরো অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ যেন ছিল শাকিবময়। এ নায়কদের নতুন ছবির ব্যানার ছিল দেয়ালে টাঙানো। কথা দিয়ে কেউ কথা রাখে না, আমার স্বপ্ন আমার দেশ, আমি নেতা হবো ও হামলা মামলা ঝামেলা’র ব্যানার শোভা পায় অনুষ্ঠানস্থলে।অনুষ্ঠানে উপস্থিত কারো কারো মুখে শোনা যাচ্ছিলো শাকিব খানই ‘চলচ্চিত্র ফোরাম’র প্রাণ!
পাঠকদের জন্য শাকিব খানের ধারনকৃত বক্তব্যের ইউটিউব লিংক দেওয়া হলঃ