অবশেষে মুখ খুললেন ‘বাবা’ রাম রহিম সিংয়ের কথিত পালিত কন্যা হানিপ্রীত ইশান। তিনি বললেন, তার পিতা নিরপরাধ। তাকে সহিংসতার অভিযোগে অভিযুক্ত করার হতাশ হানিপ্রীত। গত মাসে রাম রহিম সিংকে দুই ভক্ত নারী ধর্ষণ মামলায় জেলে ঢুকানোর পর থেকেই এক মাসের মতো হলো নিরুদ্দেশ হানিপ্রীত ইশান। তিনি আসলে কোথায় তা খুঁজে পেতে গলদঘর্ম ভারতের পুলিশ। আর এরই মধ্যে ‘বাবা’ রাম রহিম ও তাকে ঘিরে বেরিয়ে আসতে থাকে নানা রসালো কাহিনী। ভারতের মিডিয়ায় খোঁচা দিলেই এমন অসংখ্য তথ্য বেরিয়ে আসে। গতকাল ভারতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই খবর দিয়েছে, আজতক নামের টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত কথা বলেছেন হানিপ্রীত। তিনি এ সময় বলেছেন, ২৫ শে আগস্ট তার ‘পাপা’কে ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত করে শাস্তি দেয়ার পর থেকেই তিনি হতাশায় ভুগছেন। রাম রহিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলার পর তাকে গ্রেপ্তার করা নিয়ে ভারতের হরিয়ানায় তার ডেরা ও এর আশপাশে যে সহিংসতা শুরু হয় তাতে কমপক্ষে ৪১ জন নিহত হয়েছিলেন। ওই সময় সহিংসতা উস্কে দেয়ার জন্য ৪৩ জন হরিয়ানা পুলিশের তালিকায় ওয়ান্টেড। এর শীর্ষে রয়েছে হানিপ্রীতের নাম। তার আসল নাম প্রিয়াঙ্কা তানিজা। ডাক নাম ধারণ করেছেন হানিপ্রীত ইশান। আগস্টের ওই সহিংসতার পর থেকেই তিনি পলাতক। তবে আজতক চ্যানেলটিকে তিনি বলেছেন, শিগগিরই তিনি আইনী লড়াইয়ে নামচেন। তাকে দেখা যেতে পারে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টে। এ সময় তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। অজ্ঞাত স্থান থেকে তিনি একটি গাড়ির ভিতর থেকে এ কথা বলেন ওই টেলিভিশনকে। তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছোড়েন, আমি কি অগ্নিসংযোগ করেছি? কিভাবে আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়েছে? এ সময়ে ওই টেলিভিশন থেকে তাকে বলা হয়, আপনাকে তো ভিলেন, ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। জবাবে হানিপ্রীত বলেন, তারা কিভাবে আমাকে অভিযুক্ত করছে। আমি তো আমার ‘পাপা’র সঙ্গে সেখানে ছিলাম। একজন কন্যা হিসেবে আমি দায়িত্ব পালন করছিলাম। সব মেয়েই তার পিতার সঙ্গে থাকে। আমিও তার সঙ্গে ছিলাম। আপনারা কি আমার মুখ থেকে এমন কোনো কথা শুনেছেন যা উস্কানিতে ব্যবহার করা হয়েছে। আমি তো সেখানে (পাঁচকুলায় সিবিআই আদালতে) গিয়েছিলাম এই আশা নিয়ে যে, সন্ধ্যার মধ্যে আমার পিতা ফিরে আসবেন। কিন্তু যখন তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হলো, তখন আমি হতাশায় নিমজ্জিত হলাম। আমি কি করে আর কিছু ভাববো। আমি আসলে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিলাম। উল্লেখ্য, ২৫ শে আগস্ট সির্সার পাঁচকুলায় রাম রহিমের ডেরা থেকে যখন রাম রহিমকে সিবিআই আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় তখন তার সঙ্গে ছিলেন হানিপ্রীত। রাম রহিমকে শাস্তি দেয়ার দিনও তিনি তার সঙ্গে ছিলেন। রাম রহিমকে রোহটাকে একটি জেলে নেয়া হয় হেলিকপ্টারে। তখনও তার সঙ্গে ছিলেন হানিপ্রীত। সেদিন ছিল ২৫ শে আগস্ট। ওই দিন সন্ধ্যার পর থেকে হানিপ্রীতকে আর খুঁজে পাওয়া যায় নি।