নির্যাতনের অভিযোগে চিকিৎসক স্ত্রী নুসরাতের করা মামলায় নৌবাহিনী কর্মকর্তা তানভীর আলম খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়ার পরেও গ্রেফতার হচ্ছে না আসামী। নুসরাতের আইনজীবীর অভিযোগ, আসামী তানভীর আলম খান প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না।
সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭-০৯-২০১৭ বুধবার তানভীর আলম খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-২ এর জাজ সফিউল আজম। এ সময় তানভীরের বাবা, মা ও ভাইকে ট্রাইব্যুনালে তলব করে সমন জারির আদেশও দেয়া হয়। নুসরাত চলতি বছরের অগাস্ট মাসে রাজধানীর ভাটারা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
জানা গেছে, নুসরাত তার মায়ের কাছ থেকে পাওয়া সম্পত্তি স্বামী তানভীর খানের বিরুদ্ধে লিখে না দেওয়ায় তার (নুসরাত) ওপর স্বামী, শশুর ও শাশুড়ি নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের শিকার হয়ে নুসরাত একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তি হন।
নুসরাতের আইনজীবী বলেন, তানভীর ও নুসরাতের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে যে দ্বন্দ্ব ছিল। উভয় পরিবারের আত্মীয়-স্বজনের মধ্যস্থতায় আসামীরা ক্ষমা চেয়ে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নুসরাতকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়েছিলেন। তবে ফিরিয়ে নেয়ার পরও কিছু দিন স্বাভাবিক থাকলেও ফের শুরু হয় নির্যাতন। উপায় না পেয়ে আলাদা বাসায় ওঠেন নুসরাত। তানভীর সেখানে গিয়েও চলতি বছরের ২৫ জুন নুসরাতের ওপর অমানবিক শারীরিক নির্যাতন চালায়।
এ বিষয়ে নুসরাতের আইনজীবী মিথুন মজুমদার বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতন টাইব্যুনালে মামলা করলে বাদীকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠিয়ে তদন্তের আদেশ দেন বিচারক। ওই অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত ২৭-০৯-২০১৭ বুধবার বিচারক মামলা আমলে নিয়ে তানভীরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং অন্য আসামীদের তলবের নির্দেশ দেন। এই মামলায় ১২জন সাক্ষী রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ২২ দিন পরেও আসামি গ্রেফতার হয়নি বা আদালত থেকে জামিন নেন নি। যদিও তার পরিবার আদালতে উপস্থিত হয়ে সাময়িক জামিন নিয়েছেন।
এ বিষয়ে ভাটারা থানার ওসি এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা দু জনকেই ফোন দিলে তারা জানান, আসামী দুই মাস আগেই তার ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়েছেন এবং অত্র এলাকায় একাধিকবার অভিযান চালিয়েও আসামিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি কিন্তু তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে আশানুরুপ বক্তব্য দিতে পারেনি তারা।
নুসরাতের আরেক আইনজীবী ব্যারিস্টার শাহেদুল আজম জানান, আসামি ধরা পড়লে আদালতে এই মামলার সঠিক বিচার হবে। আইনের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে।
এদিকে, আসামির নামে ভাষাণটেক থানায় বাদীর গাড়ী ও পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ তদন্তরত আছে বলে দায়িত্বরত অফিসার জানিয়েছেন।