প্রথম ম্যাচে তাজিকিস্তানকে গোলশূন্য রুখে দিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপকে হারানোর পর লাল-সবুজ জার্সিধারীরা নতুন আশার আলো জ্বেলেছিল। স্বপ্ন উঁকি দিচ্ছিল মূল পর্বে খেলার। তবে, সামনে ছিল শক্তিশালী উজবেক বাধা। অন্তত রানার্সআপ হয়ে পরের রাউন্ডে উঠার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে হলে উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে হার এড়াতেই হতো মাহবুব হোসেন রক্সির শিষ্যদের। ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারলে সম্ভাবনাটা টিকে থাকবে- এমন সমীকরণ সামনে নিয়ে নেমেছিল বাংলাদেশের যুবারা। সব সামর্থ্য দিয়ে তারা শেষ পর্যন্ত চেষ্টাও করে গেল।পুরো নব্বই মিনিট উজবেকিস্তানকে আটকেও রাখে বাদশা-জাফররা। কিন্তু দুর্ভাগ্য! শেষ রক্ষা হলো না। নিয়তির বিধান বলে কথা! ড্র হয়ে যাচ্ছে ভেবে যখন বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তির হাওয়া বইতে শুরু করেছে। তখনই এক ঝড়ো হাওয়ায় লণ্ডভণ্ড সব।
ম্যাচের যোগ করা সময়ে আত্মঘাতী গোলে হেরে গেল বাংলাদেশ। এই হারে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্ব থেকে বিদায় ঘণ্টা বেজে যায় লাল সুবজের প্রতিনিধিদের।
তাজিকিস্তানে পা রাখার পর থেকেই স্বাগতিকদের চেয়ে বাংলাদেশের নজরটা বেশি ছিল উজবেকিস্তানের দিকে। দলের প্রধান কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের বিরুদ্ধে উজবেকিস্তানের দুটি ম্যাচই দেখেছিলেন। চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই তাজিকিস্তানের হিসোর সেন্ট্রাল স্টেডিয়ামে এ ম্যাচে শুরু থেকেই রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলতে শুরু করে বাংলাদেশ। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৮০ ধাপ উপরে থাকা দলটির বিপক্ষে মাঝে মাঝে আক্রমণেও গেছে জাফর-সুফিলরা। অবশ্য বলার মতো কোনো গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। উজবেকিস্তানের প্রচেষ্টাও বাংলাদেশের ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষক মাহফুজ প্রতিহত করতে থাকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। জাতীয় দল যে তিন বার খেলেছে মধ্য এশিয়ার দেশটির বিরুদ্ধে সবক’টি ম্যাচই হেরেছে বড় ব্যবধানে। এমন কি উজবেকিস্তানের যুব দলও সর্বশেষ ঢাকায় বাংলাদেশের যুবাদের হারিয়ে গেছে ৪-০ ব্যবধানে। তবে এ ম্যাচে দুই দেশের শক্তির পার্থক্য খুব একটা বোঝা যায়নি। সমান তালেই লড়েছে তারা।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশের কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি জানান, পুরো ম্যাচেই ছেলেরা কৌশল মতো খেলেছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল এক পয়েন্ট। ৯০ মিনিট পর্যন্ত মনে হয়নি এ ম্যাচটা আমরা হারতে পারি। তবে যোগ করা সময়ে উজবেকিস্তান আমাদের রক্ষণে চাপ সৃষ্টি করে। তখনই এলোমেলো হয়ে যায় রক্ষণভাগ। আর এতেই আমরা গোলটি হজম করি। গোলটি হয়েছে ম্যাচে যোগ করা তিন মিনিটের একেবারে শেষ মুহূর্তে। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের জালে বল ঢুকিয়ে বসেন ডিফেন্ডার আতিকুজ্জামান আতিক।
এ হারে তিন ম্যাচে বাংলাদেশের সংগ্রহ চার পয়েন্ট। সমান ম্যাচে নয় পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উজবেকিস্তান। দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে গোল গড়ে এগিয়ে থেকে দুই নাম্বারে স্বাগতিক তাজিকিস্তান। আগামীকাল ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। চূড়ান্ত পর্বে জায়গা না পেলেও শেষ ম্যাচ জিতে দেশে ফিরতে চান রক্সি। বাংলাদেশের এ কোচ জানান, সাফ থেকে ছেলেরা দুর্দান্ত খেলছে। আমার বিশ্বাস এখানে ছেলেরা না পারলেও সামনের দিনগুলোতে এরা দেশের পতাকা উড়াবেই।