তবে কি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ লেগেই যাবে! দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে পাল্টাপাল্টি উত্তেজনাপূর্ণ বার্তা আদান-প্রদানে এমন আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শুক্রবার ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত পাকিস্তানের পরমাণু সক্ষমতা এবং শক্তি নিয়ে প্রশ্ন জাগানিয়া এক মন্তব্য করেন। তার মন্তব্যে ছিল যুদ্ধংদেহী মনোভাবের আভাস। ওই মন্তব্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে পাকিস্তান। দিয়েছে পাল্টা হুমকি। এ খবর দিয়েছে জি নিউজ। শুক্রবার ভারতের সেনাপ্রধান বলেন, যদি সত্যিই পাকিস্তানিদের মুখোমুখি হতে হয়, তবে আমরা দেখবো তাদের পারমাণবিক বাগাড়ম্বর কতখানি সত্যি। এমন নয় যে তাদের কাছে পরমাণু অস্ত্র আছে- সেই ভয়ে আমরা সীমান্ত আক্রমণ করবো না। আমরা তাদের পরমাণু ধোঁকাবাজির মাত্রা (সক্ষমতা) কতটুকু তা দেখে নেবো। ভারতের সেনা প্রধানের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর। পাল্টা এক হুমকিতে তিনি বলেন, যদি তারা (ভারত) আসলেই আমাদের পরমাণু সক্ষমতা পরখ করে দেখতে চায়, তবে তারা চেষ্টা করে দেখতে পারে। আমাদের পারমাণবিক সক্ষমতা প্রশ্নাতীত। যে কোন হুমকি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত। এ প্রসঙ্গে উষ্মা প্রকাশ করে টুইট করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা মোহাম্মাদ আসিফ। তিনি লেখেন, ভারতের সেনাপ্রধানের এমন মন্তব্য একদমই কা-জ্ঞানহীন। এমন মন্তব্য তাকে মানায় না। তার মন্তব্যে পারমাণবিক যুদ্ধের উস্কানি রয়েছে। তবে তারা যদি যুদ্ধই চায়, তবে আমাদের পরমাণবিক সক্ষমতার মাপ যাচাইয়ে তাদেরকে আমরা স্বাগত জানাই। তখন আমাদের পরমাণু সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ মুহূর্তেই উবে যাবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন টুইটের পরে তাকে অনুসরণ করে শনিবার দু’টি টুইট করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ডক্টর মোহাম্মাদ ফয়সাল। প্রথম টুইটে তিনি লেখেন, ভারতের সেনাপ্রধানের দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং হুমকিপূর্ণ মন্তব্যে এটাই প্রমাণ হয় যে, একটি অশুভ শক্তি তাদের চিন্তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। তবে, পাকিস্তানেরও সর্বজনবিদিত প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে। দ্বিতীয় টুইটে বলেন, এ ধরণের ঘটনাকে হালকা ভাবে নেয়ার কিছু নেই। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে রোমাঞ্চকর চিন্তাভাবনার কোন অবকাশ নেই। পাকিস্তানের নিজে রক্ষা করার পূর্ণ শক্তি রয়েছে। উল্লেখ্য, গত কিছুদিন ধরে পাকিস্তানের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। সম্প্রতি, সন্ত্রাসবাদ আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে পাকিস্তানে সামরিক সহযোগিতা স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে পাকিস্তানের পরমাণু ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভারতের এমন বাগাড়ম্বরপূর্ণ মন্তব্যে যে পাকিস্তানের উত্তেজনার আগুনে ঘি ঢেলেছে তা স্পষ্টই দৃশ্যমান।