কখনও কখনও উচ্চারিত কিছু শব্দবন্ধ দেশ-কাল-সময়-এর গণ্ডী পেরিয়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। যে শব্দের অভিঘাত খুব সুদূরপ্রসারী হয়। যে শব্দের ব্যঞ্জনা অনেক সময় জীবনের অনেক গোপন সত্য উদ্ঘাটনেও আমাদের সাহসী করে তোলে।
আমার মনে হয় ‘মি টু’ নিঃসন্দেহে তেমনই দুটি শব্দ। আসলে সেই ১৯৯৭ সালে সমাজকর্মী টারানা বার্ক যখন ১৩ বছরের এক কিশোরীর মুখে তার ওপর যৌন নির্যাতনের অভিজ্ঞতার কথা শুনেছিলেন, তখনই তাঁর বুকের ভিতর জন্ম নিয়েছিল ওই ‘মি টু’।
পরে যৌন হিংসার বিরুদ্ধে তাঁর প্রচার আন্দোলনের নামও বার্ক রাখেন ‘মি টু’, অর্থাৎ ‘আমিও’ যৌন হেনস্তার শিকার ।
তবে নিরবধি কাল ধরে মেয়েরা পৃথিবীর সর্বত্র যৌন হিংসার শিকার হলেও কৃষ্ণাঙ্গ বার্ক-এর ২০০৬ সালে গড়ে তোলা ওই আন্দোলনকে বিশিষ্ট শ্বেতাঙ্গ নারীবাদীরা অবশ্য পাত্তা দেননি দীর্ঘদিন। কোনও সমর্থনই পায়নি তাঁদের।
শেষ পর্যন্ত গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড হলিউড-এর বিখ্যাত সিনেমা প্রযোজক হারভে উইনস্টেইন-এর বিরুদ্ধে সম্প্রতি যৌন পীড়নের একাধিক অভিযোগ প্রকাশ্যে উঠে এলে ওই ‘মি টু’ শব্দ দুটি ছড়িয়ে পড়ে আলিসা মিলানোর হাত ধরে। অভিনেত্রী আলিসা মিলানো যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে গত অক্টোবরে #’মি টু’ শব্দ দুটি সোশাল মিডিয়ায় হ্যাশট্যাগ হিসেবে ব্যবহার করলে সঙ্গে সঙ্গে দাবানলের মতো তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে।