অবশেষে কোটা নিয়ে আন্দোলনকারীদের কাছে হার মানতে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক এ দাবিকে দফায় দফায় বন্ধ করতে চেয়েও পারেনি সরকার। রাজধানী শাহবাগে শুরু হওয়া আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে ঢাকাসহ সারাদেশে। সপ্তাহের শুরু থেকে এ ইস্যুটি মিডিয়ায় সর্বাধিক আলোচিত হয়।
প্রথমে উচ্চশিক্ষায় বাড়তি ভ্যাট আরোপের বিরুদ্ধে আর এখন সরকারি চাকরির কোটা সংস্কারের আন্দোলন দেখে মার্কিন সমাজতাত্ত্বিক সেইমুর মার্টিন লিপসেটের তত্ত্বটির কথা মনে পড়ে যায়, ‘আপনার দেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার থেকে ৬ হাজার ডলারের মধ্যে হলে সাবধান! এ রকম মধ্যবিত্ত অবস্থার মানুষ আঘাতের মুখে বিদ্রোহ করে। অতি দারিদ্র্য পরিবর্তনের শক্তি ও চাহিদা শুষে নেয় আবার অতিসচ্ছলতা বিপ্লব-বিদ্রোহকে দূরে সরায়। প্রতিক্রিয়া করে মধ্যবিত্তরাই।’আন্দোলন
চলমান কোটা আন্দোলনেরে নেতৃত্ব দিচ্ছে মধ্যবিত্ত ঘরের তরুণেরা। তারুণ্যের এই ন্যায্য দাবির ইস্যুটিতে শুরুতে কড়া অবস্থানে ছিলো সরকার। আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে নানা সময়ে রাজনৈতিক নানা কৌশল খাটিয়ে আন্দোলনকারীদের ভুলিয়ে ভালিয়ে রাখতে চেয়েছিলো সরকার। কিন্তু তাতে কতটুকু সফল হয়েছে তারা।
তারুণ্যের কাছে হার মেনে নিয়ে অবশেষে ইস্যুুটি নিয়ে ভাবতে হচ্ছে কোদ প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতাদের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের জন্য বার্তা পাঠিয়ে কোটা সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন।
তারই ধারবাহিকতায় বুধবার সকালে সরকারি চাকরির নিয়োগে কোনো কোটা থাকবে না বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরিবর্তে মেধার ভিত্তিতে শতভাগ নিয়োগ হবে বলেও আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। সেটা কী আসলেই করা হবে?
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন বলেন, আজ সকালে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি আমাদের এ কথা বলেন।
পরে বুধবার দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখা পৃথক পোস্টেও ছাত্রলীগের সভাপতি একই কথা জানান।
এতে উভয় নেতা বলেন, “বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যা বলেন তা করেন। বিগত দিনে কোটা পদ্ধতি সংস্কার নিয়ে চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রসমাজের পক্ষ থেকে আজ সকালে আমরা (সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক; বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করি।
তিনি বলেন ‘সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা পদ্ধতি থাকবে না’। প্রধানমন্ত্রীর এ সিদ্ধান্তকে ছাত্রসমাজ সাধুবাদ জানায়। অশেষ কৃতজ্ঞতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি। জয় বাংলা