মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সহযোগিতায় ‘যাচাইকৃত’ রোহিঙ্গাদের গ্রহণে প্রস্তুত তার দেশ। দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া করতে চায় মিয়ানমার।
৩০ এপ্রিল, সোমবার মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতকালে এ কথা জানান সু চি।
সু চি বলেন, ‘মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলরের কার্যালয়ের মতে, যত দ্রুত সম্ভব যাচাইয়ের জন্য উভয় দেশের সম্মতিতে নির্ধারিত ফর্ম ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।’
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদল মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোতে পৌঁছানোর পর সেখানে তাদের অভ্যর্থনা জানান দেশটির স্টেট কাউন্সেলর।
নির্যাতিত সম্প্রদায়কে মানবিক সহায়তা প্রদান সম্পর্কিত বিষয়, সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশ্বাস ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা, নাগরিকত্ব ইস্যু, আইডিপি ক্যাম্প চালু ও বন্ধ, জাতীয় যাচাইকরণ কার্ডের নিশ্চয়তা, আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিনিধিদলের কাছে ব্যাখ্যা করেন তিনি।
এ ছাড়া যেকোনো সময়ে সন্ত্রাসী হামলার সম্ভাব্য পুনরাবৃত্তি, দ্বন্দ্বের মূল কারণ, ঘৃণাত্মক বক্তব্য প্রতিরোধ এবং স্কুল শিক্ষার জন্য অনুপ্রেরণার কথাও আলোচনা করেন সু চি।
১ মে, মঙ্গলবার প্রতিনিধিরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য পরিদর্শনে যান, যেখানে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতন ও গণহত্যার শিকার হয়। বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় দশ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা।
নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি গুস্তাভো অ্যাডোলফো মেজা কুয়াদ্রার নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চল সফর করে। সেখানে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের জন্য অভ্যর্থনা ক্যাম্প নির্মাণ করেছে।
গত ডিসেম্বরে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সম্মত হয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। সেসময় করা প্রত্যাবাসন চুক্তি অনুযায়ী জানুয়ারিতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা কথা ছিল। কিন্তু মানবাধিকার গোষ্ঠী ও রোহিঙ্গাদের মধ্যে মিয়ানমারের নিরাপদ পরিস্থিতির বিষয়ে আশঙ্কা রয়েছে।
সম্প্রতি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ও বাংলাদেশ একটি সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত করেছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানের ‘নিরাপদ, স্বেচ্ছায় এবং মর্যাদাপূর্ণ’ হবে প্রত্যাশা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর।