অভিনেত্রী তানভীন সুইটি। ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দর্শকের কাছে নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন। তবে এখন আগের মত নিয়মিত অভিনয় করছেন না। কোনো নাটকে ভালো গল্প ও চরিত্র পেলে সেটিতে অভিনয় করছেন কেবল। সুইটির ভাষ্য, আমাকে এই সময়ে প্রতিদিন টিভির পর্দায় দেখাতে হবে এমনটা ভাবি না। দর্শকের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি।একটা সময় ভালো গল্প ও চরিত্র দিয়ে সপ্তাহের বেশির ভাগ দিন টিভির পর্দাজুড়ে থাকতাম। এখন নতুনদের সময়। তারা কাজ করবে। নতুনদের সূত্র ধরে এই অভিনেত্রীর কাছে জানতে চাওয়া, এই সময়ে কার অভিনয় তার ভালো লাগে? উত্তরে সুইটি বলেন, নতুনদের মধ্যে আফরান নিশো, মেহজাবিন, ইরফান সাজ্জাদ এদের অভিনয় বেশ ভালো লাগে। নিশো তার চরিত্র নিয়ে খুব ভাবে বলে আমার মনে হয়। মেহজাবিনও অভিনয়ে অনেক পরিপক্ক। নিয়মিত অভিনয় করলে সে অনেক দূর যাবে। ইরফানের কাজও দেখেছি। ভালো অভিনয় করে। সত্যি বলতে নতুনদের মধ্যে আমি সবসময় সম্ভাবনা দেখি। প্রত্যেকেই আমরা একটা সময় নতুন ছিলাম। ভালো সুযোগ পেলে নতুনরা তাদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে পারে। তবে নতুনদের দর্শকের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার মত গল্প ও চরিত্রে কাজ করার জন্য আহবান করেন তিনি। দর্শকের মনে দাগ কাটার জন্য ব্যতিক্রমী চরিত্রের বিকল্প নেই বলেও সুইটি মন্তব্য করেন। এই অভিনেত্রী এখন অভিনয় শিল্পী সংঘের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এ সংগঠনের কার্যক্রম কেমন চলছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের এই সংগঠন শিল্পীদের স্বার্থে কাজ করছে। এটি শিল্পীদের সংগঠন। তাদের যে কোনো সুযোগ-সুবিধায় পাশে থাকার জন্য এই সংগঠন সব সময় দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। শিল্পীদের ডিজিটাল কার্ড প্রদান, পহেলা বৈশাখ উদযাপনসহ এরই মধ্যে আমরা অনেক কাজ করেছি। আগামীতে নতুন কিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে। খুব শিগগির সেগুলো সবাইকে জানানো হবে। এদিকে এই অভিনেত্রী ইয়ূথ বাংলা কালচারাল ফোরামের জয়েন্ট সেক্রেটারির দায়িত্বও পালন করছেন। এই ফোরামের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি একটি সামাজিক সংগঠন। এই ফোরাম থেকে আমরা অটিজম শিশুদের জন্য করণীয় সম্পর্কে বিভিন্ন সেমিনার আয়োজন করে থাকি। লোকজনের মধ্যে সামাজিক সচেতনা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা করছি। আমাকে এখন এই সংগঠনের কার্যক্রম নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকতে হয়। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আমি বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করি। দেশ ও সমাজের প্রতি আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব আছে। আমরা নিজের জায়গা থেকে সঠিক ভাবে এগিয়ে আসলে আমাদের দেশও এগিয়ে যাবে। এদিকে সুইটি টিভি নাটকের তার ব্যস্ততা সর্ম্পকে জানান, সম্প্রতি দুরন্ত টিভির জন্য ‘ব-তে বন্ধু’ শিরোনামের একটি শিশুতোষ ধারাবাহিকের কাজ শেষ করেছেন। এটি নির্মাণ করেছেন যুবরাজ খান। ধারাবাহিকটি নিয়ে এ অভিনেত্রী দারুণ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কাজটি করে আমি সত্যিই মুগ্ধ। শিশুদের জন্য এমন নাটক নির্মাণ হতে পারে এটিতে কাজ না করলে হয়তো জানা হতো না। শিশুদের সামাজিজক সচেতনতা ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় এই নাটকে তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের টিভি চ্যানেলগুলোতে এমন নাটক বেশি করে প্রচার করা প্রয়োজন। তাহলে সামাজিক অবক্ষয় কমে আসবে বলে আমি মনে করি। সুইটি আরো বলেন, একটি সন্তানকে আদর্শবান করে গড়ে তুলতে মায়ের ভূমিকা অনেক বেশি। আজকাল অনেক মা তার সন্তানকে মোবাইল গেইমসে আসক্ত রাখে। তাদের এই বিষয়গুলোর প্রতি সচেতন হতে হবে। আমরা যত আধুনিক হচ্ছি ততই পারস্পরিক সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। বিশষ করে নতুন প্রজন্ম সামাজিক ও পারিবারিক ভাবে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে বেশি।