জনপ্রিয় অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ। ছোট পর্দার কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। বিশেষ করে আসছে ঈদের নাটক-টেলিছবির কাজ নিয়ে তার এই সময়ে বেশি ব্যস্ততা বলে জানান। মৌসুমীর ভাষ্য, ঈদের সময় সব শিল্পীর ব্যস্ততা বাড়ে। আমাদের দেশে টিভি চ্যানেলের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি ঈদের মতো বড় উৎসবে নাটক নির্মাণের সংখ্যাও বেড়েছে। কিন্তু দর্শকের কাছে চাহিদাসম্পন্ন শিল্পীর সংখ্যা নির্দিষ্ট কয়েকজন।নতুন শিল্পীদের পাশাপাশি তাদেরকে নিয়েই প্রায় সব নির্মাতা কাজ করতে চান। ঈদের আগ পর্যন্ত একটু ব্যস্ত থাকতে হবে। মৌসুমী হামিদ এরই মধ্যে ঈদের জন্য এক খন্ডের নাটক সালাউদ্দিন লাভলুর ‘ফেসবুকে বিবাহ’, সুমন আনোয়ারের ‘কমলার বনবাস’ এবং তিনটি ছয়পর্বের সিরিয়ালে অভিনয় করেছেন। এগুলো হলো- সাইদুর রহমান রাসেলের নির্মাণে ‘ই ফর এডুকেশন’ এবং ‘পঞ্চপা-ব’। আর বরিশাল, নোয়াখালী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের ভাষা নিয়ে নির্মিত আবু হায়াত মাহমুদের হাসির ধারাবাহিক ‘বিএনসিসি’। মৌসুমী বলেন, সিরিয়ালগুলো খুব মজার। ‘ই ফর এডুকেশন’-এর শুটিং হয়েছে ব্যংককে। ‘বিএনসিসি’ ধারাবাহিকও দেশের বাইরে শুটিং করা হয়। নাটকগুলো দর্শক খুব উপভোগ করবেন। প্রতিটি নাটকই মজার মজার গল্পের। গেল ঈদে আমার অভিনীত বেশ কিছু নাটক-টেলিছবি দর্শক খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন। এই ঈদেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। ঈদের আরো বেশ কিছু নাটক-টেলিছবির স্ক্রীপ্ট হাতে আছে। পছন্দের গল্প ও চরিত্রগুলোতে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে। ঈদের কাজের বাইরে নিয়মিত ধারাবাহিকেও ব্যস্ত এই অভিনেত্রী। সুমন আনোয়ারের ‘সুখী মীরগঞ্জ’ ও ‘ইডিয়েট’ শীর্ষক দুটি ধারাবাহিকে তিনি অভিনয় করছেন বলে জানান। বড় পর্দায়ও এই অভিনেত্রী দর্শকের মনে দাগ কাটেন। ‘জালালের গল্প’, ‘ব্লাকমেইল’ ও ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনি’সহ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। সম্প্রতি এ অভিনেত্রী ‘কাঠগড়ায় শরৎচন্দ্র’ শীর্ষক একটি ছবিতে অভিনয় করেছেন। এটি নির্মাণ করছেন আরিফুর জামান। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জনপ্রিয় চরিত্রগুলো নিয়ে নির্মাণ হচ্ছে চলচ্চিত্রটি। এই ছবির রাজলক্ষী চরিত্রে অভিনয় করছেন মৌসুমী হামিদ। চরিত্রটি নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত তিনি। সম্প্রতি বিএফডিসিতে এই ছবির শুটিং হয়। ছবিটিতে শরৎচন্দ্রের ভূমিকায় দেখা যাবে জনপ্রিয় নির্মাতা-অভিনেতা গাজী রাকায়েতকে। মৌসুমী হামিদ বলেন, বাংলা সাহিত্যে শরৎচন্দ্র গভীরভাবে মিশে রয়েছেন। রাজলক্ষী শরৎচন্দ্রের একটি অনন্য সৃষ্টি। এই চরিত্রে অভিনয় করতে পারা যে কোনো অভিনেত্রীর জন্য আনন্দের। বিভিন্ন ভাবে রাজলক্ষী চরিত্রটি পর্দায় এসেছে। আমিও আমার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করেছি ভালো কিছু দর্শকের জন্য দিতে। ভালো ভাবেই ছবিটির শুটিং করেছি। সত্যি বলতে, এমন একটি চরিত্রের জন্য আমিও অপেক্ষা করেছি। আশা করছি রাজলক্ষী চরিত্রের মধ্য দিয়ে আবারো দর্শক আমাকে নতুনভাবে দেখবেন। এই ছবির ধারাবাহিকতায় কি মৌসুমী আগামীতে চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করতে চাই। কিন্তু মনের মতো গল্প ও চরিত্র পাই না বলেই চলচ্চিত্রে নিয়মিত কাজ করা হয়ে ওঠে না। আমাকে নিয়ে যদি নির্মাতারা কাজ করতে চান তাহলে স্বাচ্ছন্দ্যে আমি এগিয়ে আসবো। আলাপনে এই অভিনেত্রী তার ক্যারিয়ার ভাবনা নিয়েও কথা বলেন। ‘ডাকাত রানী’, ‘লাঠিয়াল’ ও ‘গ্রামের ‘চেয়ারম্যান’সহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে এ যাবৎ তাকে দেখা গেছে। চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতেই তিনি পছন্দ করেন। এই প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন, নিজেকে একজন সু-অভিনেত্রী হিসেবে দেখতে চাই। দর্শকের মনে জায়গা করে নেওয়া অনেক কঠিন। একজন শিল্পীকে দর্শকের মনে থাকার জন্য গতানুগতিক কাজের বাইরেও কাজ করতে হয় বলে আমি মনে করি। আগামীতে এমন কিছু চরিত্রে অভিনয় করতে চাই যেগুলোর মধ্য দিয়ে দর্শক আমাকে মনে রাখবে।