নিহত কিশোর পূর্ণ বিশ্বাসের বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
ছেলেধরার গুজবে এবার আতঙ্কিত ত্রিপুরাও। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ছেলেধরা সন্দেহে গণধোলাইয়ের খবর আসছে। রাজ্য পুলিশের তরফে বিষয়টি গুজব বলে আতঙ্ক না ছড়ানোর আবেদন জানানো হয়েছে।
বেশ কিছুদিন ধরেই আসাম, মেঘালয়, মণিপুরসহ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ছেলেধরার গুজব মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে। এমনকি আসামে ছেলেধরা সন্দেহে দুই শিল্পী গণধোলাইয়ে প্রাণ হারান।
এখন ছেলেধরা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ত্রিপুরায়। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী সিধাই মোহনপুরের একটি রাবারবাগান থেকে নিখোঁজের পর পূর্ণ বিশ্বাস নামের ১১ বছরের এক কিশোরের লাশ উদ্ধারের পর ঘটনার সূত্রপাত হয়।
প্রথমে গুজব রটে—কিশোরের কিডনিসহ অন্যান্য অঙ্গ খুবলে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বিধায়ক ও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ নিজেই চাউর করেন কিডনি চুরির খবর। সেই খবরকে বৈধতা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ করা হয়েছে।
তবে লাশের ময়নাতদন্ত করে জানা যায়, কিশোরটির কোনো অঙ্গ খোয়া যায়নি।
আজ বৃহস্পতিবার ত্রিপুরার শল্য চিকিৎসক প্রতাপ সান্যাল প্রথম আলোকে জানান, ত্রিপুরায় অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সুবিধা নেই। তা ছাড়া ১১ বছরের কিশোরের শরীর থেকে কিডনি নিয়ে তেমন কোনো লাভও হতো না।
রাজ্য পুলিশের প্রধান অখিল কুমার শুক্লা আজ প্রথম আলোকে বলেন, ছেলেধরার বিষয়টি পুরোটাই গুজব।
পূর্ণ বিশ্বাসের খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি আন্দোলন।
পূর্ণ বিশ্বাসের খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি আন্দোলন।
অচেনা লোক দেখলে আইন হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য জনগণের কাছে অনুরোধ জানান অখিল কুমার শুক্লা। যোগাযোগের সামাজিক মাধ্যম বা অন্য কোনোভাবে গুজব ছড়ালে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
এর মধ্যে পুলিশ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে। তবু গুজব বন্ধ হয়নি। বরং বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছে গণধোলাইয়ের খবর।
এদিকে কিশোর পূর্ণ বিশ্বাস হত্যার তদন্ত ও বিচার দাবিতে শুরু হয়েছে আন্দোলন। পুলিশ এখনো খুনের কারণ বুঝতে পারছে না।
গতকাল বুধবার পূর্ণ বিশ্বাসের বাড়িতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। পরিবারটিকে পাঁচ লাখ রুপি আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি খুনিদের কঠোর শাস্তির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।