তিন সিটি নিয়ে ক্ষমতাসীনরা চক্রান্তে মেতেছে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তিন সিটি নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনরা ধুলিঝড়ের সৃষ্টি করে চক্রান্তে মেতে আছে। তারা সাধারণ ভোটারের অধিকার ফিরে পাওয়াকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। সেজন্য সরকার ভোট সন্ত্রাস ও ভোট কারচুপির নতুন নতুন মডেল আবিষ্কার করছে।

শনিবার রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, তিন সিটিতে নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই নৌকার প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অসংখ্য অভিযোগ আসতে থাকে। আবার পাশাপাশি বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট প্রার্থী এবং সমর্থক ও কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান এক চরম পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। খুলনা-গাজীপুর নির্বাচনের মতোই আসন্ন তিন সিটি নির্বাচনে বিরোধী দলের ভোটার ও পোলিং এজেন্ট শূন্য করার এক অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছে। সরকারের নির্দেশে তিন সিটি করপোরেশনে একপেশে নির্বাচন করার ডিজাইনারের কাজ করে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন ও পুলিশ প্রশাসন। নির্বাচন কমিশন সরকারের হাতের মুঠোয় সেই প্রমাণ নিজেরাই রেখে যাচ্ছে, যেমন তিন সিটিতে তফসিল ঘোষণার পর বিনা ওয়ারেন্টে কাউকে গ্রেফতার না করার প্রজ্ঞাপন জারির উদ্যোগ নিয়েছিল ইসি। কিন্তু পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের আপত্তির মুখে সেই উদ্যোগ থেকে সরে আসে কমিশন।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারণা শুরুর পর থেকেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে আগ্রাসী আক্রমণ চালাচ্ছে। বিরোধী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের তালিকা ধরে গ্রেফতার অব্যাহত রেখেছে। অবিরাম পুলিশি হয়রানিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের পরিবার। তাদের নামে মামলা না থাকলেও পেন্ডিং মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। আর নির্বাচন নিয়ে এতো অনাচারের পরেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে নির্বাচন কমিশন।

তিন সিটিতে নির্বাচন কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা কর্মীদের গণগ্রেফতার, হয়রানি থামছে না উল্লেখ রিজভী বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় গতকাল সারারাত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে পুলিশ হানা দিয়েছে। বাসায় গিয়ে তারা পরিবারের সদস্যদের বলেছে ২ আগষ্টের আগে কাউকে যেন সিটি করপোরেশন এলাকায় দেখা না যায়। বরিশাল সিটি করপোরেশনে গ্রেফতার না করার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশ থাকলেও সেটিকে অমান্য করে পুলিশ লাগাতার গ্রেফতার করছে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের। ধানের শীষের প্রার্থীর উঠোন বৈঠক ও সভাও ভেঙে দিচ্ছে পুলিশ।

এদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় গণগ্রেফতারের গতি থামছেই না। সেখানে নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট কারচুপির মহা আয়োজনের আভাস স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। প্রায় ৯০ শতাংশ আওয়ামী সমর্থিত লোকদের পোলিং ও প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভোটের আগের রাতে নৌকায় সিল মারা ব্যালট পেপার ভোটকেন্দ্রে লুকিয়ে রাখা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ধানের শীষের প্রার্থীরা। এছাড়া, সিলেট সিটি নির্বাচনেও রাজশাহী ও বরিশালের মতোই চিত্র। নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের মধ্যে কোনো আনন্দ উচ্ছ্বাস নেই, ভোটারদের মনে একটা থমথমে ভাব বিরাজ করছে। সিলেটেও নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বা হয়রানি না করার জন্য হাইকোর্টের নির্দেশ থাকলেও পুলিশ সেটি অমান্য করে ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে। জনগণ প্রশাসন ও ইসির ওপর ভরসা রাখতে পারছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *