নির্বাচন কমিশন রাখঢাক না করে মুখোশের শেষ সুতোটুকুও খুলে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তার পরও বিএনপি তিন সিটির লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারদের বাড়িঘর, দোকানপাট, বাজার ভেঙে দেওয়া, পুড়িয়ে দেওয়া, ঘরছাড়া করা, কর্মীশূন্য-নেতাশূন্য সর্বোপরি ভোটারশূন্য করা কোন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষণ?’
‘যদিও তিন সিটিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো আলামত এখন পর্যন্ত নেই, তবুও ভোটারদের নিয়ে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী লড়াইয়ে মাঠে থাকবেন ধানের শীষের প্রার্থী,’ যোগ করেন রিজভী।
আজ রোববার সকালে তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের একদিন আগে দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘গাজীপুর ও খুলনায় নতুন মডেলের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশন কথা দিয়েছিল, আগামী নির্বাচনগুলো অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করবে। কিন্তু তিন সিটি নির্বাচনে প্রচার শুরু হলে কমিশনের পুরোনো চেহারা আবার ফুটে উঠতে শুরু করে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যেভাবে খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা, নির্বাচনী এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি, ধানের শীষের নির্বাচনী এজেন্টদের এলাকাছাড়া করা এবং প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছিল, তার চেয়েও বেশি ভয়ংকর রূপ দেখা যাচ্ছে তিন সিটি এলাকায়। সেখানে আকাশে-বাতাসে ভোটারদের মধ্যে ভেসে বেড়াচ্ছে ভয় আর গুঞ্জন। গাজীপুর ও খুলনার ভোটের মতো নয়া সিস্টেমের ভোট ডাকাতি প্রত্যক্ষ করবে কি না, এই আতঙ্কে আছে তিন সিটির ভোটাররা।’
‘নির্বাচন কমিশন ভোটারদের মন থেকে ভয়ভীতি দূর করে আশঙ্কামুক্ত ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। আগামী তিনটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সরকারের দমন-নীতির উত্থান প্রবল থেকে প্রবলতর হয়েছে।’
‘ইসি মর্মর মনুমেন্ট’
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ভোটারশূন্য একতরফা নির্বাচনের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে নির্বাচন কমিশন বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশের নির্বাচন এখন সরকারি সন্ত্রাসবাদে আক্রান্ত। সুষ্ঠু নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলাটাই যেন এখন আওয়ামী লীগের প্রধান এজেন্ডা। আকাশের তারা পৃথিবী থেকে দেখা যায়, কিন্তু গণতন্ত্রকে যাতে দূর থেকেও দেখা না যায়, সে ব্যবস্থা করছে ভোটারবিহীন সরকার।’
রিজভী আরো বলেন, ‘তিন সিটি নির্বাচনেই অসংখ্য অভিযোগেও মর্মর মনুমেন্টের মতো নিশ্চুপ থেকেছে ইলেকশন কমিশন, প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা করেনি। নির্বাচন কমিশনের মনে-মস্তিষ্কে অন্ধকার নেমেছে বলেই যুক্তি সেখানে অবান্তর। নিজেদের স্বাধীন ক্ষমতা প্রয়োগ না করে মনে হয় সরকারি হুকুমের ভয়ে অসহায় নীরব-নিশ্চল পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। সে জন্য একের পর এক নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদেরই তল্পী বহন করছে নির্বাচন কমিশন।’