ঘুম সবার জীবনেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য অংশ। ঘুম মানেই বিশ্রাম,দেহে প্রশান্তির আবেশ। ঘুম আমাদেরকে দেয় সারা দিনের ক্লান্তি ও কর্মব্যস্ততা থেকে অব্যাহতি , প্রস্তুত করে তোলে নতুন দিনের জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আমাদের অনেকেরই ঘুম সম্পন্ন হয় না।ঘুম অপূর্ণ থাকায় দেহ সতেজ থাকে না, দ্রুতই ক্লান্তি ও অবসাদ ভর করে দেহে। মন সহজে কোন কাজে মনোযোগ দিতে পারে না। ফলে মানসিক অবসাদগ্রস্থতা বেড়ে যায় ও কর্মতৎপরতা কমে যায়।
তাই ঘুম ভালো ও পরিপূর্ণ করার ছয় উপায় থাকছে আজ –
১.ঘুমের একঘন্টা আগে মোবাইল ও ল্যাপটপ নিজের থেকে দূরে রাখুন।
আজকের আধুনিক বিশ্বে মোবাইল,ল্যাপটপ,ট্যাবলেট,কম্পিউটারের চার দেয়ালে ঘেরা আমাদের জীবন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আমরা বিভন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় ডুবে থাকি। রাতে না ঘুমিয়ে বন্ধু বান্ধবের সাথে চ্যাটিং করে সময় পার করি।এতে আমাদের ব্রেইন অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে , অন্যদিকে এসব যন্ত্রের স্ক্রিন থেকে আসা আলোক রশ্মি আমাদের চোখে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।এই রশ্মি আমাদের চোখের টিয়ার ধীরে ধীরে শুকিয়ে ফেলতে পারে। অন্যদিকে স্বাভাবিক ঘুমের সময় ব্রেনের ব্যস্ততার ফলে মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত চাপে থাকতে হয় ফলে ঘুমের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হতে পারে ।তাই ঘুমের নির্দিষ্ট সময়ের এক ঘন্টা আগেই এসব মোবাইল,ল্যাপটপ,ট্যাবলেট ও যাবতীয় যন্ত্র নিজের থেকে দূরে রাখাই শ্রেয়।
২.শান্ত ও স্নিগ্ধ অভ্যাস গড়ে তুলুন।
সুন্দর একটি ঘুমের জন্য প্রয়োজন শান্ত পরিবেশের। শান্ত ও চুপ চাপ পরিবেশ যে ঘুমের জন্য সহায়ক তা সবাই জানে। সাধারণ কাজে সময় নষ্ট করে ঘুমের ক্ষতি না করে ঘুমের পূর্বে শান্ত ও চুপচাপ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।
৩.স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
সুন্দর ঘুমের জন্য সুন্দর দেহ যে প্রয়োজন তা অনস্বীকার্য। আর সুন্দর দেহের জন্য প্রয়োজন সুস্বাস্থ্য। আর এজন্য ভালো খাদ্যাভাসের গুরুত্ব অপরিসীম।প্রতিদিনের খ্যাদ্যাভাসে তাই রাখতে হবে প্রচুর পুষ্টিকর খাদ্য। প্রয়োজনে বি এম আর এবং বি এম আই নির্ধারণ করে খাদ্য ক্যালরী হিসাব করে খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে হবে।
৪.মেডিটেশন
যদিও মেডিটেশন সকালে করাই বেশি উপযুক্ত। তবুও অনেক বিজ্ঞানীর অভিমত যে প্রায় ১৬ ঘন্টা পরও এর কার্যকারিতা থাকে। মনকে শান্ত ও সুস্থ রাখতে এর জুড়ি নেই।
- মেডিটেশন আমাদের
- ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করতে সাহায্য করতে পারে
- চিন্তামুক্ত রাখতে পারে
- মনোযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে
তাই একটি শান্তিদায়ক ঘুমের জন্য মেডিটেশন করে দেখতে পারেন
৫.শারীরিক ব্যায়াম
সুস্থ সুন্দর ঘুমের জন্য প্রয়োজন সুস্থ দেহ ও মন।সুস্থ দেহেই বাস করে সুন্দর মন ।তাই,ঘুমের জন্য সুস্থ দেহের কোন বিকল্প নেই।
- শারীরিক ব্যায়াম আমাদের
- ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে
- মনকে ভালো রাখে
- মাংশাপেশী ও হাড়কে শক্ত করে
নিয়মিত ব্যায়াম শরীরকে সুস্থ রাখে যা গভীর নিদ্রা বা REM প্রদানে সহায়ক বলে বিবেচিত।
৬. নিয়ম মাফিক শিডিউল
নিয়মিত নিয়মমাফিক টাইম টেবিল মেইনটেইন করা উচিত।এতে করে প্রত্যেকদিন সঠিক সময়ে ঘুমানোর সু অভ্যাস গঠিত হবে।ঘুমের আগে নিয়মিত কিছু কাজ শিডিউল অনুযায়ী করা উচিত ।এতে সময় হলে বা ওই কাজগুলো করলে ব্রেন থেকে ঘুমের চাপ নির্দেশিত হবে ।এভাবে নিয়মমাফিক শিডিউলে কাজ করলে তা ঘুমে সাহায্য করতে পারে।