বগুড়ায় চলন্ত নাইট কোচে ডাকাতি, যাত্রী ছিল ডাকাতদল

বগুড়ার শেরপুরে এনা এন্টারপ্রাইজ (এসি কোচ) নামে একটি যাত্রীবাহী নাইট কোচে যাত্রী সেজে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতদল যাত্রীদেরকে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্নালংকার ও মোবাইল ফোন সহ প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় ওই নাইট কোচের চালক এমরান আলী বাদী হয়ে শেরপুর থানায় একটি মামলা (নং ৭) দায়ের করেন।

শেরপুর থানায় এজাহার ও প্রত্যক্ষদর্শী সুত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (৭ আগষ্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারি থেকে এনা এন্টারপ্রাইজ (এসি কোচ যার নং ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৩৯১৮) দুইজন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেয়। পথিমেধ্য ওই কোচে উলিপুর হতে ৫জন যাত্রী ও কুড়িগ্রাম হতে আরো ২৭ জন যাত্রী উঠানো হলে মোট যাত্রীর সংখ্যা হয় ৩৪ জন। রাত ১টা ৪০ মিনিটের দিকে বগুড়া জেলার শাজাহানপুর থানা অতিক্রম করার পর হঠাৎ যাত্রীবেশে বেশে থাকা ০৭ জনের ডাকাতদল গাড়ীর ড্রাইভারকে মারপিট করে গাড়ির নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেয়। এবং যাত্রীদেরকে বলে যার নিকট যা আছে তা দিয়ে দিতে। এ সময় ডাকাতদের হাতে ধারালো চাকু, অস্ত্র ও পিস্তল ছিল। যে সকল যাত্রী তাদের কথামতো দ্রুত মালামাল ও টাকা পয়সা দেয়নি তাদেরকে মারপিট করে টাকা পয়সা মোবাইল ফোন ও স্বর্নালংকার ছিনিয়ে নেয়। পরে ডাকাতদল রাত আনুমানিক ২ টার দিকে উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকায় নেমে হাইওয়ে রোডের পূর্বদিকে মাটির রাস্তা দিয়ে দৌড়িয়ে পালিয়ে যায়। কোচের একজন যাত্রী এ খবর শেরপুর থানায় দিলে ওসি হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাতদের ধরতে বিভিন্ন গ্রামে অভিযান পরিচালনা করেন কিন্ত কাউকে আটক বা মালামাল উদ্ধার করতে পারেননি।

ডাকাতিকালে ডাকাতদল ওমর ফারুক নামের এক যাত্রীর নিকট থেকে ২টি মোবাইল ফোন ও নগদ ১ লক্ষ ২২ হাজার টাকা, নজরুল ইসলাম নামের এক যাত্রীর কালো ব্যাগে রক্ষিত ৫ লক্ষ টাকা ও ৩ ভরি ওজনের সোনার গহনা, আলামিন সরকারের নিকট থেকে ১টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৫৫ হাজার টাকা, মোবাশ্বের হোসেনের ১টি ফোন ও নগদ ৪৭ হাজার টাকা, শহিদুজ্জামান রাসেলের ১টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৬০ হাজার টাকা, রাকিবুজ্জামানের নিকট থেকে ২টি মোবাইল ফোন ও নগদ ৪৮ হাজার টাকা সহ ১৬ জন যাত্রীর নিকট থেকে ১১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় ডাকাতদের মারপিটে বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয় বলে জানা গেছে।

সোহাগ নামের এক যাত্রী জানান, আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম, হঠাৎ চিৎকারে জেগে উঠে দেখি ডাকাতদল মারপিট করছে, আর যার নিকট যা কিছু পাচ্ছে তা ছিনিয়ে নিচ্ছে। তাদের হাতে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও পিস্তল থাকায় আমরা কেউ কিছু বলতে পারিনি।

কোচের ড্রাইভার এমরান আলী জানান, শাজাহানপুর থানা অতিক্রম করার পর ডাকাতরা আমাকে মারপিট করে গাড়িটি তাদের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে নেয় এবং তাদের মধ্যে হতে ১ জন ডাকাত গাড়িটি চালিয়ে শেরপুর পর্যন্ত নিয়ে আসে।

এ প্রসঙ্গে শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমরা সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছি। সে সময় যাত্রীদের কথা শুনে দ্রুত আশে পাশের বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়েও কাউকে আটক করতে পারিনি। থানায় মামলা নিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *